শ্রীনগরে নিরাপত্তার প্রস্তুতি। ছবি: এপি।
জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। গত ছ’দিনে কোথাও কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। ভূস্বর্গের পরিস্থিতি নিয়ে দেশ জোড়া উদ্বেগের মাঝে এ বার বিবৃতি দিয়ে জানাল জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। একই সঙ্গে, পুলিশের তরফে সাধারণ মানুষকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ এবং ‘ভুয়ো’ খবরে বিশ্বাস না করার আবেদনও করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
শনিবার কাশ্মীর পুলিশের ডিজি দিলবাগ সিংহ বলেন, “কোথাও কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। একটি ছোটখাট পাথর ছোড়ার ঘটনা ঘটেছিল। তা বড় আকার নেওয়ার আগেই সামাল দেওয়া হয়েছে।’’ সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ ও তাতে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে পুলিশের গুলিচালনার দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন আইজি এসপি পানি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম উপত্যকায় গুলিচালনার খবর দেখাচ্ছে। কিন্তু, তা সম্পূর্ণ ভুয়ো। এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। গত এক সপ্তাহ ধরেই উপত্যকা শান্তিপূর্ণ রয়েছে।”
শনিবারই কয়েকটি সংবাদপত্র এবং ওয়েবসাইটে রাজ্যের কোনও কোনও প্রান্তে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর প্রকাশিত হয়। জানা যায়, সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ নাকি হয়েছে শৌরা এলাকায়। কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, এমন একটি ভিডিয়ো বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে দেখা যায়। পুলিশের গুলি চালানোর আওয়াজও শোনা গিয়েছিল ওই ভিডিয়োয়। যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, প্রথমে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স ও পরে পাকিস্তানের সংবাদপত্রে শ্রীনগর-বারামুলাতে দশ হাজার মানুষের বিক্ষোভের যে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে তা মনগড়া।
আরও পড়ুন: কার্ফু শিথিল হবে কাশ্মীরে, লড়াই কোর্টে
এরপরই, শনিবার, পুলিশের তরফে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানানো হয়। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যসচিব ও ডিজিপির বয়ানে একটি টুইট করা হয় ওই দিন। তাতে বলা হয়েছে, ‘সাধারণ মানুষ যেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভুয়ো খবরের ফাঁদে পা না দেন। গত ছ’দিনে কাশ্মীরে কোনও গুলি চালনার ঘটনা ঘটেনি। গত ছ’দিনে একটি বুলেটও ছোড়েনি পুলিশ।’
শনিবার ডাল লেকের বাজার। ছবি: এএফপি।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘কাশ্মীরের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। সাধারণ মানুষও সহযোগিতা করছেন। পরিস্থিতি বুঝে বিধিনিষেধও শিথিল করা হচ্ছে। শ্রীনগর-সহ অন্যান্য শহরে ভাল রকম যান চলাচল করছে। আজ মানুষজন ইদের কেনাকাটায় ব্যস্ত।’
শনিবার শ্রীনগরে ইদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সাধারণ মানুষ। ছবি: এএফপি।
আরও পড়ুন: চাই পাক অধিকৃত কাশ্মীর, হুঙ্কার সন্তদের
সোমবার ইদ। কিন্তু, তার আগে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ নিয়ে জম্মু-কাশ্মীরে কী প্রতিক্রিয়ার জন্ম হচ্ছে? সেখানকার পরিস্থিতিই বা কেমন? তা জানতে আগ্রহী গোটা দেশ। শনিবার, কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক চলাকালীন কাশ্মীরে গোলমালের খবর আসে। রাহুল গাঁধী ওই বৈঠকে ছিলেন না। কিন্তু ওই খবর পেয়ে তাঁকে ডাকা হয়। পরে রাহুল অভিযোগ করেন, ‘‘কাশ্মীরে সব যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে রেখেছে সরকার। সেখান থেকে গোলমালের খবর আসছে। আমার দাবি, সেখানকার নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুক সরকার। গোপনীয়তার পর্দা তোলা হোক।’’ রাহুলের প্রশ্নের কিছু ক্ষণের মধ্যেই উপত্যকার পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দেয় জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশ।