কাশ্মীরের বেশির ভাগ এলাকাতেই কার্ফু শিথিল করা হয়েছে। ছবি: এপি।
নিরাপত্তার কড়াকড়ি কমানো হয়েছে। খোলা হয়েছে স্কুল-কলেজ-অফিস-বাজার। তা সত্ত্বেও রাস্তায় চলছে না বাস-ট্যাক্সি। দোকানপাটও বন্ধ। স্কুল-কলেজ-অফিস খোলা হলেও দেখা মেলেনি পড়ুয়া বা কর্মীর। ফলে জম্মু ও কাশ্মীরের বিভাজন তথা বিশেষ মর্যাদা বিলোপের ৩৬ দিনে পা রেখেও সোমবার উপত্যকার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত। একেবারেই ছন্দ ফেরেনি কাশ্মীর।
এ দিন কাশ্মীরের বেশির ভাগ এলাকাতেই কার্ফু শিথিল করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, উপত্যকার ১০৫টি থানা এলাকার মধ্যে ৯২টি থানা এলাকাতেই কার্ফু তুলে নেওয়া হয়েছে। যদিও শ্রীনগর এবং মাইসুমা থানা এলাকা-সহ শহরের প্রত্যন্ত প্রান্তের বেশ কিছু এলাকায় এখনও নিরাপত্তার কড়াকড়ি বহাল রয়েছে। শ্রীনগরের ব্যস্ততম এলাকা লাল চক ও তার আশপাশের এলাকায় গত কাল পর্যন্ত কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। এ দিন তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আধাসেনা বাহিনীর জওয়ানেরা এখনও বিভিন্ন জায়গায় পাহারায় রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবারের রাত পোহালেই মহরম। তবে গত প্রায় এক মাসের মতোই উপত্যকার কোথাও কোথাও ধর্মীয় মিছিল বা জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখা হয়েছে। রবিবার মহরম মাসের অষ্টম দিনেও শ্রীনগর বা তার আশপাশের এলাকায় কোনও মিছিল চোখে পড়েনি। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, প্রতি বছরই মহরমের অষ্টম ও দশম দিনে এ ধরনের ধর্মীয় মিছিলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে এ বছরে সেই নিষেধাজ্ঞা অন্য মাত্রা পেয়েছে। মসজিদ বা ধর্মীয় স্থানে এ ধরনের মিছিলকে কেন্দ্র করে বিচ্ছিন্নতাবাদী বা জঙ্গিরা ফায়দা তুলতে পারে বলে দাবি প্রশাসনের। ৫ অগস্ট সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর গত এক মাসে ধরেই তাই মসজিদ ও ধর্মীয় স্থানে মিছিল বা জমায়েত করা যাবে না বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে লক্ষ্যপূরণে তৃপ্ত মোদী-শাহ, অর্থে অনর্থ ঢেকে ৩৭০-এ জয়ধ্বনি
আরও পড়ুন: ভারতের বিরুদ্ধে বড়সড় নাশকতার ছক, গোপনে মাসুদকে জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছে পাকিস্তান!
প্রশাসনের তরফে উপত্যকায় স্কুল-কলেজ-অফিস বা দোকানপাট খোলানোর চেষ্টা করেও বিশেষ সাড়া মেলেনি। নিরাপত্তাজনিত কারণে এখনও ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে নারাজ বহু অভিভাবক। দোকানপাটেও ঝাঁপ ফেলে রেখেছেন বহু ব্যবসায়ী। যান চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় সরকারি অফিস খোলা থাকলেও তাতে হাজিরা কম। ল্যান্ডলাইন টেলিফোন পরিষেবা স্বাভাবিক হলেও মোবাইল বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও ব্যাহত।