ফাইল চিত্র।
ইংরেজি ও উর্দু মিলিয়ে রোজ অন্তত ১৭৪টি খবরের কাগজ বেরোত কাশ্মীর উপত্যকায়। সোমবার জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার পরে কার্ফু ও বিধিনিষেধ এড়িয়ে প্রকাশিত হতে পারছে মাত্র পাঁচটি। তা-ও কয়েকটি করে পাতা, পৌঁছচ্ছে হাতে গোনা পাঠকের কাছে। শ্রীনগরের ল্যামবার্ট লেনেই অধিকাংশ খবরের কাগজের দফতর। কার্ফুর কারণে ছাপা কাগজ পড়েই থাকছে সেখানে। দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের যদিও ঘোষণা, ‘‘উপত্যকায় সংবাদমাধ্যমের উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়নি। যে কোনও খবর স্বাধীন ভাবে প্রকাশ করতে পারে তারা।’’
সাধারণত ১২ পাতার খবরের কাগজ ছাপা হতো ‘রাইজ়িং কাশ্মীর’। এই ক’দিন চার পাতার বেশি ছাপতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ। কারণ টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন, ইন্টারনেট স্তব্ধ। সংবাদ সংস্থার যোগাযোগও ছিন্ন। উপত্যকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর দফতরে আসছে না। কার্ফুর কারণে কর্মী ও সাংবাদিকদের অনেকেই অফিসে হাজির হতে পারছেন না।
কী ভাবে কাগজটি চলছে? অ্যাসোসিয়েটেড এডিটর ফাইজ়ুল ইয়াসমিন জানাচ্ছেন, সরকারি টিভি চ্যানেল থেকে খবর সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর চার জন সাংবাদিক দফতরেই দিনরাত থেকে কাগজ প্রকাশের ধারাবাহিকতাটুকু ধরে রাখছেন। সন্ধ্যার পরে কার্ফু একটু শিথিল থাকে। ছাপার জন্য তৈরি করা চারটি পাতা তখন শহরের উপকণ্ঠের ছাপাখানায় হাতে করে দিয়ে আসা হয়।
এই ভাবেই বেরোচ্ছে ‘গ্রেটার কাশ্মীর’, ‘কাশ্মীর রিডার’, ‘কাশ্মীর উজ়মা’ এবং ‘তামিস-ই-ইরশাদ’-ও। ‘কাশ্মীর রিডার’-এর এক কর্মী বলেন, ‘‘পাঠকের হাতে তুলে দেওয়ার কোনও উপায় নেই। এত পরিশ্রম করে কাগজ ছেপে যখন পড়ে থাকে, খুবই খারাপ লাগে।’’ সাংবাদিক ফাইজ়ুল ইয়াসমিনের কথায়, ‘‘আমাদের গোটা প্রজন্মের কাছে সব চেয়ে বড় খবর এই ৩৭০ অনুচ্ছেদের অবলুপ্তি! কিন্তু আমরা পাঠকের কাছে সেটা পৌঁছে দিতেই পারছি না। এ যে কত বড় হতাশার কথা!’’