কাশ্মীর স্বাভাবিকই, দাবি অমিতের, শাহের বক্তৃতা ‘মিথ্যের ঝুড়ি’, বলছে উপত্যকা

কয়েক দিনের তুষারপাত আর তার জেরে বিদ্যুৎ বিপর্যয় নিষেধাজ্ঞার কাশ্মীরে বাসিন্দাদের যন্ত্রণা আরও বাড়িয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৪১
Share:

ছবি: পিটিআই।

সংসদে আজ খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানালেন, কাশ্মীর স্বাভাবিকই আছে। ইন্টারনেটও ‘উপযুক্ত সময়ে’ চালু করা হবে। কিন্তু উপত্যকার পরিস্থিতি অন্য কথা বলছে।

Advertisement

কয়েক দিনের তুষারপাত আর তার জেরে বিদ্যুৎ বিপর্যয় নিষেধাজ্ঞার কাশ্মীরে বাসিন্দাদের যন্ত্রণা আরও বাড়িয়েছে। দু’দিন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও আজ আবার ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে পোস্টার দেখা দিয়েছে শ্রীনগরের শহরতলি এলাকা, গান্ডেরবাল ও অনন্তনাগে। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে দোকানপাট।

তারই মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তৃতার উপরে নজর রেখেছিলেন অনেকে। তবে তাতে ফের হতাশই হয়েছেন তাঁরা। শ্রীনগরের মহিলা কলেজের শিক্ষক আব্দুল মান্নান শেখ বললেন, ‘‘আমাদের সব কিছু কেড়ে নিয়ে এখন ওঁরা জ্ঞান দিচ্ছেন। এই বক্তৃতা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিল।’’ মহিলা কলেজেরই ছাত্রী রাকিবা সালিমের আশা ছিল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়তো জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার কথা ঘোষণা করতে পারেন। হতাশ তিনিও। বললেন, ‘‘রাজ্যে তা-ও বাসিন্দাদের কিছুটা নিরাপত্তাবোধ থাকে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ জানানোর পথই থাকছে না। উনি তো এখানে রাজনৈতিক আলোচনা শুরু করার কথাও বললেন না।’’ রাকিবার সহপাঠী শাইস্তার মতে, শাহের বক্তৃতা ‘মিথ্যের ঝুড়ি’ ছাড়া কিছু নয়। চিকিৎসক আব্দুল কবীর দারের মতে, অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী না সরানো পর্যন্ত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরার দাবি করাটাই হাস্যকর।

Advertisement

আরও পড়ুন: নির্বাচনী বন্ডে মোদী নিশানায়

গত দু’দিন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিল উপত্যকার পরিস্থিতি। কিন্তু আজ সকালে আবার শ্রীনগরের শহরতলি, গান্ডেরবাল ও অনন্তনাগে হুমকি পোস্টার দেখা গিয়েছে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুললে পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে ওই পোস্টারে। ফলে ওই এলাকাগুলিতে আজ ফের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। গণপরিবহণ ব্যবস্থা অবশ্য মোটের উপরে চালু ছিল। খোলা ছিল অনেক স্কুল। সরকারি সূত্রে খবর, উপত্যকার অনেক বেসরকারি স্কুল পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম না পরে স্কুলে আসতে বলছে।

এরই মধ্যে উপত্যকার পড়ুয়াদের ক্ষতি নিয়ে মুখ খুলে এ দিন সরকারের অস্বস্তি বাড়ান জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল এন এন ভোরা। বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে এক আলোচনায় তিনি বলেন, ‘‘গত ১০-২০ বছরে কাশ্মীরে শিক্ষার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। এটাই কাশ্মীরের সবচেয়ে বড় ক্ষতি।’’

শ্রীনগরের এমএলএ হস্টেলে বন্দি নেতাদের আত্মীয়েরা দাবি করেছেন, ওই ভবনে ন্যূনতম পরিষেবা নেই। ডাল লেকের তীরে সেন্টর হোটেল থেকে সরিয়ে সম্প্রতি ওই নেতাদের এমএলএ হস্টেলে আনা হয়েছে। আজ সেখানে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন আত্মীয়েরা। তাঁদের দাবি, শীতের উপযুক্ত হিটার ও অন্যান্য ব্যবস্থা নেই হস্টেলে। দেওয়া হচ্ছে বাজে খাবার। প্রবীণ পিডিপি নেতা সরতাজ মাদনির ছেলে সাকিব মাদনির দাবি, ‘‘পুলিশ আমাদের হেনস্থাও করছে। আমাদের গাড়ি হস্টেলের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া হল না। বন্দিদের জন্য আমরা ম্যাট আর হিটার এনেছিলাম। কিন্তু সেগুলি ভিতরে নিয়ে যেতে পারলাম না। এর চেয়ে ওঁদের গৃহবন্দি করাই ভাল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement