পরিবর্তন র্যালি-তে ভুপিন্দর সিংহ হুডা। ছবি: পিটিআই।
কর্নাটক, গোয়ার পরে হরিয়ানা। অক্টোবরে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘পরিবর্তন র্যালি’ করে নিজের দল কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও চার দশক ধরে হরিয়ানায় দলের নেতৃত্ব দেওয়া ভুপিন্দর সিংহ হুডা। দল নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশের আগেই নিজের ইস্তাহার ঘোষণা করে জানালেন, দলে থাকুন বা না-থাকুন বিজেপির মনোহরলাল খট্টারের বিরুদ্ধে তিনিই মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী।
রাহুল গাঁধী তরুণ অশোক তানওয়ারকে প্রদেশ সভাপতি করার পর থেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল হুডার। প্রধান কারণ, দলে গুরুত্ব হারানো। দিল্লি এসে মনমোহন সিংহকে নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়েও গিয়েছিলেন হুডা। অনেকে ভেবেছিলেন, এ দিন রোহতকের ‘পরিবর্তন র্যালি’ থেকে নতুন দলের কথা ঘোষণা করবেন হুডা। তবে, নির্বাচনের মাস দেড়েক আগে নতুন দল গড়ে তেমন সুবিধা হবে না বলে অনেক অনুগামী তাঁকে পরামর্শ দেওয়ায় হুডা এ দিন সে পথে হাঁটেননি। তার বদলে অনুগত নেতাদের নিয়ে ২৫ সদস্যের একটি কমিটি গড়ে তিনি জানান, এই কমিটিই ঠিক করবেন ভবিষ্যতের কর্মপন্থা। এই কমিটিতে তিনি রেখেছেন হরিয়ানার ১৫ কংগ্রেস বিধায়কের মধ্যে ১২ জনকেই। বাকিরা দলের প্রাক্তন সাংসদ, বিধায়ক বা গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তবে কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, নতুন দল ঘোষণা না-করে হুডা কংগ্রেসে থেকে যাওয়ার রাস্তাও খুলে রাখলেন। একই সঙ্গে চাপে রাখলেন সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বকেও। দল যদি তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে ভাল, না হলে অন্য পথ খুলে রাখলেন।
এ দিন ভিড়ে ঠাসা সভায় হুডা বলেন, ‘‘দলীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের যাবতীয় বিধিনিষেধ থেকে আপনাদের মুক্ত করতে এসেছি আমি।’’ কাশ্মীরের প্রায় পড়শি রাজ্য হিসেবে সেখান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের প্রভাব হরিয়ানাতেও পড়ে। কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব নরেন্দ্র মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রবল বিরোধিতা করেছে। তবে হুডা এ দিন বলেন, ‘‘কেন্দ্র হোক বা রাজ্য, কোনও সরকার সঠিক কাজ করলে আমি তাকে সব সময়ে স্বাগত জানিয়েছি। যেমন কাশ্মীর থেকে ৩৭০ তুলে নেওয়া। আমি তাকে সমর্থনই করছি। কারণ দেশভক্তি ও স্বাভিমানের প্রশ্নে কারও সঙ্গে সমঝোতায় রাজি নই। আমার দল কিছুটা ভুল রাস্তায় চলছে। সেই কংগ্রেস আর নেই।’’
আগে রাজ্যের বিজেপি সরকার সম্পর্কে হুডা মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বেশ কিছু তারা রূপায়ণ করেছে, এটা ভাল কথা।’’ এ দিন তিনি ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলকে সমর্থন করেন। তাঁর কথায়, ‘‘হরিয়ানার বহু জওয়ান কাশ্মীরে মোতায়েন রয়েছেন। তাঁদের স্বার্থেই সমর্থন করছি।’’ হুডা এ দিন ঘোষণা করেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী হলে রাজ্যের চাকরির ৭৫ শতাংশ তিনি হরিয়ানার ছেলেদের জন্য সংরক্ষণ করবেন।