বুধবার লখিমপুর পৌঁছে নিহত কৃষকের পরিজনকে সান্ত্বনা রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার। ছবি: টুইটার
উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার দু’দিন আগে লখিমপুর খেরির ঘটনায় নিহত কৃষকদের জন্য ৪৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছে। বুধবার রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণায় তাকে টেক্কা দিলেন দুই কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন রাহুল গাঁধীর সঙ্গে লখনউ বিমানবন্দরে নামেন কংগ্রেসের দুই মুখ্যমন্ত্রী— ছত্তীসগঢ়ের ভূপেশ বঘেল এবং পঞ্জাবের চরণজিৎ সিংহ চন্নী। পুলিশ কংগ্রেসের ঠিক করে দেওয়া গাড়িতে তাঁদের সীতাপুর ও লখিমপুর খেরিতে যেতে দিতে আপত্তি করায় বিমানবন্দরেই অবস্থানে বসেন রাহুল। সেই সময়েও তাঁর পাশে রইলেন বঘেল ও চন্নী। তখনই চন্নী ঘোষণা করলেন, গাড়িতে পিষে দেওয়া চার কৃষক এবং কর্তব্যরত সাংবাদিক রমন কাশ্যপের পরিবারকে পঞ্জাব সরকার ৫০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেবে। পরে বঘেলও একই পরিমাণ সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
এ দিন সকালে দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশে ঢোকার সীমানায় কড়া পাহারার বন্দোবস্ত করে যোগী সরকারের পুলিশ। খবর আসে, কংগ্রেসের নেতা সচিন পাইলট জয়পুর থেকে সকালে দিল্লি নেমে একটি গাড়ি নিয়ে উত্তরপ্রদেশের দিকে রওনা হয়েছেন। সীতাপুরে পিএসি ক্যাম্পে আটক থাকা নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সঙ্গে দেখা করা তাঁর উদ্দেশ্য। তার পরে গন্তব্য লখিমপুর খেরি। সীতাপুরে পিএসি ক্যাম্পের বাইরে টানা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কংগ্রেস কর্মীরা। সচিন সেখানে পৌঁছলে বিক্ষোভ জোরদার হতে পারে আশঙ্কা করে, সীমানাতেই তাঁকে আটক করার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। সে জন্য সমস্ত গাড়িতে তল্লাশি চালানো হতে থাকে। বিকেলে মোরাদাবাদ থেকে এক সঙ্গী-সহ আটক করা হয় পাইলটকে।
কিন্তু পুলিশ যে ভাবে লখিমপুর খেরিতে যেতে বিরোধী নেতাদের বাধা দিচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে অখিলেশ যাদবকেও লখনউয়ে আটকে দেওয়া হয়। তিনি নিজের বাড়ির উঠোনেই অবস্থানে বসেন। বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ, এখন কংগ্রেসের যোগ দেওয়া দলিত নেত্রী সাবিত্রীভাই ফুলেকেও থানায় ২৪ ঘণ্টা আটকে রেখে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। পুলিশ তাঁকে থাপ্পড় মেরেছে বলে অভিযোগ করেন ফুলে। তিনি জানান, আটক করার পরে সাংবিধানিক অধিকারের কথা বলায় এক পুলিশ কর্তা এগিয়ে এসে সপাটে তাঁর গালে থাপ্পড় মেরে বলেন, “আপনি ‘সংবিধান, সংবিধান’ বলে চিৎকার করুন। তবে মনে রাখবেন, এখানে পুলিশ যা বলবে সেটাই শেষ কথা। তারাই ঠিক করবে কে কোথায় যাবে!”
শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত আবার অন্য প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, পুলিশ লখিমপুর খেরিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে আর লখনউয়ে বিরোধী নেতাদের আটক বা গ্রেফতার করছে। তাঁর প্রশ্ন, লখিমপুর কি পাকিস্তানে নাকি, যে ভারতীয়রা যেতে পারবে না? কোন অধিকারে উত্তরপ্রদেশ সরকার সেখানে যাওয়া আটকাচ্ছে?