ফাইল ছবি।
দিন দশেক আগে বজরং দল মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী স্টেশনে শীতের রাতে যুগলকে নামিয়ে দিয়েছিল ট্রেনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরা থেকে। তরুণকে মারধরও করা হয়েছিল। আপত্তির কারণ ছিল, হিন্দু মহিলাকে নিয়ে কেন সফর করবেন মুসলিম ব্যক্তি! দাবি করা হয়েছিল, বজরং দলের তৎপরতায় ‘লভ জিহাদ’ রোখা গিয়েছে। পরবর্তীতে মহিলার বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলে দু’জনকেই ছেড়ে দিয়েছিল রেলওয়ে পুলিশ। এ বার জানা গেল, সেই তরুণের বিরুদ্ধে ধর্মান্তরন বিরোধী ধারায় মামলা করা হয়েছে। আরও জানা গেল, এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করেছেন সে দিন ওই তরুণের সঙ্গেই যে মহিলাকে ট্রেন থেকে নামিয়েছিল বজরং দল, তিনিই।
গত ১৪ জানুয়ারি, ওই মুসলিম যুবক ও তাঁর সফর সঙ্গী হিন্দু মহিলাকে টেনেহিঁচড়ে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয় বজরং দল। তরুণকে মারধর করা হয়। তার পর রেলওয়ে পুলিশ এসে যুগলকে নিয়ে যায় থানায়।
ভোপাল পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার ১০ দিন পর দায়ের করা অভিযোগপত্রে ওই মহিলা জানিয়েছেন, স্বামীর বন্ধু ওই ব্যক্তির তাঁদের বাড়়িতে নিত্য যাতায়াত ছিল। কয়েক মাস আগে ওই ব্যক্তি তাঁর কিছু আপত্তিকর ছবি তোলেন। মহিলার অভিযোগ, ওই ব্যক্তি ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন এবং টাকা দাবি করেন। অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, কিছুদিন আগে থেকেই ওই ব্যক্তি মহিলাকে ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ের জন্যও চাপ দিতে থাকেন।
ওই মহিলার দাবি, চাপের মুখেই তিনি বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন। অভিযুক্ত তাঁকে জোর করে অজমেঢ়ে নিয়ে যাওয়ার পথেই লোকেরা তাঁদের রুখে দেন। কিন্তু যখন রেল পুলিশ তাঁদের উজ্জয়িনী স্টেশনের রেল থানায় নিয়ে যায়, তখন কেন তিনি এ কথা জানাননি? মহিলার দাবি, তিনি সেই সময় খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, তাই অভিযোগ করেননি। ভোপাল পুলিশ জানিয়েছে, তারা অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করার চেষ্টা করছেন।
গত ১৪ জানুয়ারি, ঘটনার দিন উজ্জয়িনী জিআরপি-র পুলিশ সুপার নিবেদিতা গুপ্ত বলেছিলেন, ‘‘তরুণ ও তরুণী পরিবারিক বন্ধু। তরুণীর মা তা নিশ্চিত করার পর আমরা ওঁদের ছেড়ে দিই।’’
এই প্রেক্ষিতেই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে বিয়ের জন্য ধর্ম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আইন আছে। একেই ‘লভ জিহাদ’ আখ্যা দিয়ে একাধিক ক্ষেত্রে গা জোয়ারিরও অভিযোগ রয়েছে বজরং দলের মতো কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে।