তাঁদের আন্দোলনের চাপে পড়েই সরকার আগের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করল, দাবি করেছেন ঝাড়খণ্ডি ভাষা সংঘর্ষ সমিতির অন্যতম সদস্য আকাশ। সরকারের একটি সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে, ‘আমলাতান্ত্রিক গোলমালের জেরে রাজ্যে বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়েছে। ভুল সংশোধন করা হয়েছে।’
নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবাদের মুখে পিছু হঠল হেমন্ত সোরেন সরকার। ‘ঝাড়খণ্ড স্টাফ সিলেকশন কমিশন (জেএসএসসি)’-এর পরীক্ষায় বোকারো ও ধানবাদ জেলার জন্য জারি করা অনুমোদিত ভাষার তালিকা থেকে শেষ পর্যন্ত বাদই গেল ভোজপুরি ও মগহি ভাষা। সরকারি বিজ্ঞপ্তি নিয়ে গোটা ঝাড়খণ্ড জুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলনের চাপেই পিছু হঠতে বাধ্য হল সোরেন সরকার, মনে করছে সে রাজ্যের আদিবাসী ও মূলনিবাসীদের সংগঠন।
গত বছর ২৩ ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ড রাজ্য সরকার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তাতে ছিল, জেলাভিত্তিক সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় অনুমোদিত ভাষার তালিকা। দেখা যায়, ধানবাদ ও বোকারো জেলার জন্য অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষার সঙ্গেই রয়েছে ভোজপুরি ও মগহি ভাষা। তারই প্রতিবাদে গর্জে ওঠে ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী ও মূলনিবাসীদের সংগঠন। গোটা রাজ্য জুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ আন্দোলন। এতে ঘৃতাহুতি দেয় এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের নিশ্চুপ থাকা।
মূলত প্রতিবাদের মুখেই পিছু হঠে গত শুক্রবার ঝাড়খণ্ড সরকার আরও একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই দুই জেলা থেকে ভোজপুরি ও মগহি ভাষা প্রত্যাহারের নির্দেশনামা জারি করে। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে রয়েছে নাগপুরি, উর্দু, খোর্থা, কুরমালি এবং বাংলা। ডিসেম্বরের বিজ্ঞপ্তিতে এই তালিকার সঙ্গেই ছিল ভোজপুরি ও মগহিও।
নিজস্ব চিত্র।
ডিসেম্বরের সরকারি বিজ্ঞপ্তির পরই বিক্ষোভ দানা বাঁধে। ভোজপুরি ও মগহি ভাষাকে সরকারি নিয়োগে অনুমোদিত আঞ্চলিক ভাষার তালিকায় রাখা হলে, তা হবে আদিবাসী ও মূলনিবাসী জনগণের উপর জোর করে ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার সমতুল, এই স্লোগানে ভর করে বিশেষত বোকারো ও ধানবাদ জেলায় বিক্ষোভ আন্দোলন দাবানলের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। ঝাড়খণ্ডি ভাষা সংঘর্ষ সমিতির আন্দোলনকারীদের দাবি, এই দুই জেলায় ভোজপুরি ও মগহি ভাষা বলেন, এমন মানুষের সংখ্যা নিতান্তই হাতেগোনা। তাই এই দুই জেলায় সরকারি নিয়োগে ওই দুই আঞ্চলিক ভাষা অন্তর্ভুক্ত হলে তা আদিবাসী ও মূলনিবাসীদের অধিকারে আঘাত হানবে।
সংগঠনের নেতৃত্বের দাবি, গত কয়েক দিনে তাঁরা অন্তত ৫০টি জমায়েতে অংশ নিয়েছেন। বিপুল সংখ্যক মানুষের সামনে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। তবে রাজ্যওয়াড়ি ভাবে তাঁরা ভোজপুরি ও মগহির বিরোধী নন বলে জানাচ্ছেন সংগঠনের অন্যতম সদস্য তীর্থনাথ আকাশ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সামগ্রিক ভাবে এই দুই ভাষার বিরোধিতা করছি না। লতেহার, গড়ওয়া এবং পালামৌ জেলায় এই দুই ভাষাভাষী মানুষের সংখ্যা যথেষ্ট। সেখানে এমন হলে আপত্তি করব কেন?’’
তাঁদের আন্দোলনের চাপে পড়েই সরকার আগের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করল, দাবি করেছেন আকাশ। সরকারের একটি সূত্র থেকে দাবি করা হয়েছে, ‘আমলাতান্ত্রিক গোলমালের জেরে রাজ্যে বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়েছে। ভুল সংশোধন করা হয়েছে।’