সংক্রমণ লাগামছাড়া, কোভিড কেয়ার সেন্টারে তাই চলছে প্রস্তুতি। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে। ছবি— পিটিআই।
এক দিনে দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত হলেন ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। জাতীয় রাজধানী অঞ্চল (এনসিআর) ধরলে আক্রান্তের সংখ্যা এরও প্রায় দ্বিগুণ। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে পরিকাঠামোর অভাবে ভুগেছে দিল্লি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজধানীর স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বর্তমান অবস্থা খতিয়ে দেখতে আজ সন্ধ্যায় বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা। ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ ও দিল্লি সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। আমজনতার সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসকেরাও। তাঁদের দেখতে আজ এমসে যান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া।
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সতেন্দ্র জৈন জানিয়েছেন, এক দিনের মধ্যে রাজধানীতে সংক্রমণ ৪১ শতাংশ বেড়েছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় দিল্লিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫,০৯৭। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের মতে, করোনার উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে রয়েছেন বহু মানুষ, যাঁরা পরীক্ষা করাতে যাচ্ছেন না। ঠিকমতো পরীক্ষা হলে দিল্লিতে আজই আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে যেত বলে আশঙ্কা করছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। দিল্লির পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রও। তাই আজ বিকেলেই দিল্লির স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, বিশেষ করে হাসপাতালগুলিতে যথেষ্ট সংখ্যক অক্সিজেনযুক্ত শয্যা, আইসিইউ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা। অবিলম্বে প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের ৫০% শয্যাকে কোভিড রোগীদের জন্য সংরক্ষিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হোটেল, স্টেডিয়াম, অতিথিনিবাসগুলিকে করোনা কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা ছাড়াও কোভিডের চিকিৎসায় লাগে এমন জীবনদায়ী ওষুধ অন্তত এক মাসের জন্য মজুত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দিল্লি সরকারকে।
আমজনতার সঙ্গেই করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকেরা। এমসের নিউরোলজি শাখার চিকিৎসক পি শরৎচন্দ্র জানিয়েছেন, আবাসিক চিকিৎসকদের মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ এই মুহূর্তে করোনায় আক্রান্ত। ফলে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে শুরু করেছে। আজ এমসে গিয়ে পিপিই কিট পরে অসুস্থ চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। অন্য হাসপাতালগুলির মধ্যে রামমনোহর লোহিয়াতে ৪৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত। হিন্দু রাও হাসপাতাল ও লোকনায়ক হাসপাতালে যথাক্রমে ২০ ও সাত জন চিকিৎসকের কোভিড হয়েছে। লেডি হার্ডিঞ্জ হাসপাতালে সংক্রমিত হয়েছেন ৬৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী। তেগবাহাদুর হাসপাতালে সংক্রমিত চিকিৎসকের সংখ্যা ৩৫। সব মিলিয়ে গোটা দিল্লিতেই পাঁচশোর উপরে চিকিৎসকের কোভিড হয়েছে। আগামী দিনে এই হারে চিকিৎসকেরা সংক্রমিত হতে থাকলে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড়সড় ফাঁক তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করছে সব পক্ষই।