প্রতীকী ছবি।
সাল ২০০৬। ফোন ধরতেই ওপার থেকে এক পুরুষকণ্ঠ প্রশ্ন করেছিল, ‘‘একটি আলোচনাসভা রয়েছে শিলঙে। সেই আলোচনাসভায় কি আপনাকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরতে পারি?’’ ফোনের ও পারের ব্যক্তি নিজের পরিচয় দিতেই বাক্রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন আশা। স্বয়ং ভারতের রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালাম! তাঁর মতো এক জন অতি সামান্য মানুষকে আলোচনাসভায় উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরতে চাওয়া হচ্ছে! আর তার জন্য তাঁর কাছে সেই অনুমতি চাইছেন এক কিংবদন্তি!
গোটা বিষয়টি এত অল্প সময়ের মধ্যে ঘটে গিয়েছিল যে, একটা ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছিলেন আশা। সম্বিৎ ফিরতেই তিনি সম্মতি দিয়েছিলেন।
শিলঙে একটি আলোচনাসভায় যোগ দিতে যাওয়ার আগে বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা আশা রামাইয়াকে ফোন করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি কালাম। আশা এইচআইভি আক্রান্ত। তাঁকেই শিলঙের আলোচনাসভায় উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন কালাম।
তার পর থেকে বহু আলোচনাসভায় আশাকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, নিজের লেখা ‘ইনডমিটেবল স্পিরিট’ বইয়ে আশাকে তাঁর আট ‘রোল মডেল’-এর এক জন হিসাবে উল্লেখ করেছেন। আশার লড়াইয়ের কাহিনিকে অনুপ্রেরণার উদাহরণ তুলে ধরেন কালাম।
আশার লড়াইয়ে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন তিনি। আর আশা এক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, কালামই ছিলেন তাঁর জীবনের অনুপ্রেরণার সবচেয়ে বড় উৎস। কালামের মৃত্যু হয়েছে ২০১৫ সালে। তাঁকেই অনুপ্রেরণার শক্তি হিসাবে মেনে নিয়ে এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আশা।
২০০৬-এর পর মাঝে ১১ বছর কেটে গিয়েছে। এইচআইভি আক্রান্তদের নিয়ে এখন নানা রকম কর্মশালার আয়োজন করেন। পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করেন। কী ভাবে এইচআইভি আক্রান্তদের সামলাতে হবে, তা নিয়ে দেশ-বিদেশের অনেককেই প্রশিক্ষিত করার কাজ করছেন আশা।
আশা এবং তাঁর স্বামী ইলাঙ্গো রামচন্দ্র এইচআইভি আক্রান্ত হলেও তাঁদের ২১ বছরের ছেলে কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ এবং স্বাভাবিক।