সূচনা শেঠ। ছবি: সংগৃহীত।
ছোট্ট একটি হাত। সেটি ছুঁতে চাইছে একটি মাছকে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে সেটি একটি অ্যাকোয়ারিয়াম। কাচের দেওয়ালের বাইরে থেকে যে কচি হাতটি অ্যাকোয়ারিয়ামের ভিতরে থাকা মাছটিকে ছুঁতে চাইছে, সেটি আর কারও নয়, বেঙ্গালুরুর স্টার্টআপের সিইও সূচনা শেঠের সন্তান। যাকে সোমবারই খুনের অভিযোগ উঠেছে তার মায়ের বিরুদ্ধে।
তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে এসেছে সূচনার একটি সমাজমাধ্যমের পোস্ট। মাস তিনেক আগে করা হয়েছিল সেই পোস্ট। ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি শেয়ার করেছিলেন সূচনা। তাঁর পুত্র অ্যাকোয়ারিয়ামের ভিতরের একটি মাছকে ছুঁতে চাইছে। তার পরই সেই ছবির ক্যাপশনে হ্যাশট্যাগ দিয়ে লিখেছিলেন, “হোটায়উইলহ্যাপেন।” অর্থাৎ কী হবে। তা হলে কি ওই ছবির মাধ্যমেই ছেলের ভবিষ্যতের কথা ব্যক্ত করতে চেয়েছিলেন? এখন এই প্রশ্ন উঠে আসছে তদন্তকারীদের মনে। যে ছবিটি সূচনা পোস্ট করেছেন, সেটি অত্যন্ত ইঙ্গিতবহ ছিল বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা।
২০১৯ সালে পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন সূচনা। ২০২০ সালে স্বামী বেঙ্কট রমনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়। সেই সম্পর্কের ফাটল দিনে দিনে আরও বেড়েছিল। তার শেষ পরিণতি হয় বিবাহবিচ্ছেদ। সূচনা এবং বেঙ্কট বিবাহবিচ্ছেদের পথ বেছে নেন। কিন্তু পুত্র কার কাছে থাকবে তা নিয়েও একটা প্রশ্ন তৈরি হয়। কিন্তু আদালত সন্তানকে মায়ের হেফাজতে রাখারই অনুমতি দিয়েছিল। তবে প্রতি সপ্তাহের রবিবার বাবাকে পুত্রের সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেয় আদালত। পুলিশ সূত্রে খবর, পুত্রকে নিজের হেফাজতে রাখলেও একটা আতঙ্কের মধ্যে থাকতেন সূচনা। এই বুঝি পুত্রকে নিজের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করবেন বেঙ্কট! সেই আতঙ্ক ক্রমশ গ্রাস করেছিল সূচনাকে। পুত্রকে যদি নিজের হেফাজতে না রাখতে পারেন, তা হলে কারও হতে দেবেন না, প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছেন, এই ধারণাই কাজ করেছিল সূচনার মধ্যে। আর সেই চিন্তাভাবনা থেকেই কি খুন করলেন সন্তানকে? এখন সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
গোয়ার ক্যান্ডোলিমের একটি হোটেলে পুত্রকে খুনের অভিযোগ উঠেছে সূচনার বিরুদ্ধে। সেই হোটেল ছেড়ে পুত্রের দেহ ব্যাগে ভরে কর্নাটকের উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানেই চিত্রদুর্গ জেলায় সূচনাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় শিশুটির দেহ।