পিউ ঘোষ
আইআইটি গাঁধীনগরের ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষক পিউ ঘোষের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক ঘনীভূত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আইআইটি গাঁধীনগরের পড়ুয়া এবং পিউয়ের বন্ধুরা এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত চেয়ে অনলাইন আবেদন শুরু করেছেন। সই সংগ্রহ করে তা পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীকে।
৩২ বছরের পিউয়ের বাড়ি বর্ধমানে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিটেক এবং এমটেক করেছিলেন তিনি। এর পর ২০১৫ সালে পিএইচডি করতে আইআইটি গাঁধীনগরে যান। অভিযোগ, ৬ জুলাই ক্যাম্পাসে নিজের কোয়ার্টারে পিউয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। দু’দিন আগেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। তাঁর ঘরের দেওয়ালে লেখা ছিল, ‘আই কুইট’। আত্মহত্যার কারণ এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তবে পিউয়ের সহপাঠী এবং বন্ধুরা যে আবেদন করেছেন, তাতে অভিযোগ করা হয়েছে, অসম্ভব কাজের চাপ এবং গাইডের ‘বঞ্চনার’ জেরে তিনি এই কাজ করেছেন। এই ঘটনার বিচার তাঁরা চাইছেন। পিউয়ের গাইডও বাঙালি। অনলাইন আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, পিউয়ের ভয় ছিল, পাঁচ বছর ধরে চূড়ান্ত পরিশ্রমের পর তাঁর গবেষণালব্ধ বিষয়টির পেটেন্ট থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হবে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা যথাযথ তদন্ত এবং বিচার চাইছেন। পিটিশনে আরও লেখা হয়েছে, এমন ঘটনা আকছার ঘটছে। অনেক গবেষক শেষ পর্যন্ত বঞ্চনায়, মানসিক যন্ত্রণায় গবেষণা থেকে সরে যান। অথবা জীবন শেষ করে দেন। এর শেষ হওয়া দরকার। পিউয়ের পরিবারের পক্ষ থেকেও এই মেধাবী ছাত্রীর এমন মৃত্যুর তদন্ত চাওয়া হয়েছে।
পিউয়ের স্বামী থাকেন আমেরিকায়। লকডাউনের পরিস্থিতিতে বাবা-মায়ের কাছে বর্ধমানে ছিলেন পিউ। ১৯ জুন গুজরাত ফিরে যান। ক্যাম্পাস সূত্রের খবর, ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকার পরে ৩ জুলাই তিনি ক্যাম্পাসের আবাসনে ফেরেন। তখন তাঁকে যাঁরা দেখেছিলেন, তাঁদের পিউকে স্বাভাবিকই মনে হয়েছিল।
আইআইটি গাঁধীনগর কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সকলেই খুব দুঃখিত। বিষয়টি এখন তদন্তাধীন, তাই এই বিষয়ে কোনও তথ্য দেওয়া বা মন্তব্য করা সম্ভব নয়। কর্তৃপক্ষ এই তদন্তে সম্পূর্ণ ভাবে সহযোগিতা করবে।