প্রতীকী ছবি।
রাস্তার মধ্যে প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন এক মহিলা। সাহায্যের জন্য ছোটাছুটি করছেন দিশাহারা স্বামী। কেউ দাঁড়িয়ে দেখছেন, কেউ সে দিকে না তাকিয়েই পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন তো কেউ আবার আবেগপূর্ণ গলায় আহা-উঁহু করেই মানবিকতার দায়িত্বটুকু পালন করলেন। প্রসব যন্ত্রণায় কাতরানো এক মহিলাকে যখন পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছেন তথাকথিত শিক্ষিত সমাজ, শেষমেশ এক ভিখারি তাঁর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। ভিখারির সাহায্যেই মাঝরাস্তায় কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন ওই মহিলা। মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে একই শহরের দু’রকম মুখ দেখলেন শহরবাসী।
সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরুর মানভিতে। ওই মহিলা এবং তাঁর সন্তান দু’জনেই সুস্থ আছেন। মানভির বিধায়ক জি হাম্পায়া নায়েক এই ঘটনাকে এখনও পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর ইতিহাসে ঘটা সুন্দর ঘটনাগুলির মধ্যে অন্যতম বলে উল্লেখ করেছেন। হাম্পায়া বলেন, ‘‘মানবিকতার ইতি যে এখনও হয়নি এই ঘটনাই তার প্রমাণ দিল।’’
৩০ বছরের ইল্লেম্মা কর্নাটকের সানা বাজারের বাসিন্দা। সন্তানসম্ভবা ইল্লেম্মার তিন পুত্র সন্তান রয়েছে। ঘটনার দিন স্বামী তাঁকে বেঙ্গালুরু থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দূরে মানভিতে চিকিৎসা করাতে নিয়ে আসেন। রক্তাল্পতা থাকায় তাঁকে রাইচুর ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সে রেফার করেন চিকিৎসকেরা। সেখান থেকেই চিকিৎসা করিয়ে ফিরছিলেন ওই দম্পতি। বাসের মধ্যে থাকার সময়ই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন মহিলা। প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়ে যায়। সকাল সাড়ে ৯টার সময় মানভিতে বাস পৌঁছলে নামতে গিয়ে রাস্তাতেই বসে পড়ে কাতরাতে শুরু করেন তিনি।
আরও পড়ুন: মেয়েদের গায়ের চামড়া তুলে রমরমিয়ে চলছে পুরুষাঙ্গ বড় করার ব্যবসা
সকলেই যখন পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলেন, ওই মহিলাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন ছেড়া, মলিন কাপড় পরা মহিলা। অন্যদের মতো তিনিও ব্যস্ত ছিলেন। বেরিয়েছিলেন বাঁচার জন্য অর্থের জোগানে। কিন্তু অন্যদের মতো বোধহয় মানবিকতাটাকে বাড়িতে ফেলে আসতে পারেননি তিনি। তাই ওই মহিলাকে সাহায্য করতে নিজেই এগিয়ে আসেন। তাঁর পরিচিত কিছু মহিলাকে জড়ো করে সেই রাস্তার এক পাশেই সন্তান জন্মাতে সাহায্য করেন তিনি।