—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মানুষের অসুবিধা করে রাস্তার মাঝে মন্দির, দরগা কিংবা গুরুদ্বার থাকতে পারে না। বুলডোজ়ার সংক্রান্ত মামলায় এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। অপরাধের মামলায় অভিযুক্তদের বাড়ি বুলডোজ়ারের মাধ্যমে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর এই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, আগামী ১ অক্টোবরের পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত দেশের কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন ‘বেআইনি নির্মাণ’ ভাঙার যুক্তি দিয়ে বুলডোজ়ার চালাতে পারবে না। তবে আদালত জানিয়েছিল, সরকারি রাস্তা, জলাশয়, রেললাইনের ধার বা ফুটপাথ জবরদখল করে গড়ে ওঠা বেআইনি নির্মাণের ভাঙার ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ নেই।
মঙ্গলবার ছিল বুলডোজ়ার সংক্রান্ত মামলার শুনানি। বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। আমাদের নির্দেশ সব ধর্ম এবং গোষ্ঠীর জন্য।” একই সঙ্গে দুই বিচারপতির সংযোজন, “যদি মন্দির, গুরুদ্বার কিংবা দরগার মতো কোনও ধর্মীয় কাঠামো রাস্তার মাঝে থাকে, তবে তা সরিয়ে দেওয়া উচিত। জনগণের সুরক্ষা সব কিছুর ঊর্ধ্বে।”
মঙ্গলবারের শুনানিতে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত এবং মধ্যপ্রদেশ সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তাঁর উদ্দেশে শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, অপরাধের মামলা চলেছে, এই যুক্তিতে কি কারও বিরুদ্ধে বুলডোজ়ার চালানোর মতো পদক্ষেপ করা যায়? তুষার জানান, এ ক্ষেত্রে আগাম নোটিস, এমনকি স্বচ্ছতার জন্য রেজিস্টার্ড পোস্টের মাধ্যমে নোটিস দেওয়া উচিত।
গত শুনানিতে শীর্ষ আদালত সলিসিটর জেনারেলের উদ্দেশে প্রশ্ন তুলেছিল, কেন বুলডোজ়ারের মাধ্যমে বাড়ি ভাঙার ঘটনা ঠেকাতে নির্দেশিকা দেওয়া হবে না? প্রসঙ্গত, দেশের বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, বিজেপি এবং তাদের শরিক দল পরিচালিত রাজ্য সরকারগুলি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই অভিযুক্তের বাড়ি বুলডোজ়ার নিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটি ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে নিশানা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই ধরনের কাজের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। মধ্যপ্রদেশে শিবরাজ সিংহ চৌহান মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বুলডোজ়ার দিয়ে অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙার অভিযোগ উঠেছে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামীর সরকারের বিরুদ্ধে রয়েছে একই অভিযোগ।