মুক্তির পাঁচ মাস পরে মুখ খুললেন ফারুক আবদুল্লা— ফাইল চিত্র।
জন নিরাপত্তা আইনে তাঁকে প্রায় সাত মাস বন্দি করে রেখেছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। মুক্তি পাওয়ার পাঁচ মাস পরে এ বার মুখ খুললেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রীকে সৎ হওয়ার ‘পরামর্শ’ দিয়ে বললেন, ‘‘ভারত সরকারকে এখন আর কেউ বিশ্বাস করতে পারছে না। এমন একটা দিনও যায় না, যেদিন তারা মিথ্যে কথা বলে না।’’ সেই সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, ‘‘এই ভারত গাঁধীর নয়।’’
গত বছরের ৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা এমনকি, পূর্ণ রাজ্যের স্বীকৃতি বাতিল করেছিল মোদী সরকার। এর পরেই ন্যাশনাল কনফারেন্সের সাংসদ ফারুক এবং তাঁর ছেলে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমরকে জন নিরাপত্তা আইনে অন্তরীণ করা হয়। মার্চ মাসে ফারুক মুক্তি পেলেও তাঁর অবাধে ঘোরাফেরা এবং সাংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।
ফারুকের দাবি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত ৫ অগস্ট সংসদে দাঁড়িয়ে জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করার ঘোষণা করার একদিন আগেও কেন্দ্রের তরফে এ বিষয়ে বিন্দুমাত্র ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘একদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। আমি তাঁকে প্রশ্ন করেছিলাম, কেন কাশ্মীর উপত্যকায় বিপুল সংখ্যায় সেনা পাঠানো হচ্ছে? কেন পযর্টকদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে? কোন অমরনাথ যাত্রা বাতিল করা হচ্ছে? দেখে মনে হচ্ছে আমরা যেন পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চলেছি।’’
আরও পড়ুন: ঋণ শোধে ব্যর্থ অনিল অম্বানী, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রশাসক নিয়োগ আদালতের
প্রধানমন্ত্রী মোদী সেদিন তাঁর প্রশ্নের সদুত্তর দেননি বলে ফারুকের অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে যখন পুলিশ বলল যে আমি বাড়ির বাইরে বেরতে পারব না, ঠিক সে সময়ই আমি ৩৭০ ধারা বাতিলের কথা জানলাম।’’ ৮৩ বছরের ফারুক জানালেন, অন্তরীণ থাকার সময় দাঁতের ডাক্তার এবং চোখের হাসপাতালে যাওয়ার জন্য কার্যত ভিখারির মতো প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল তাঁকে। তাঁর অভিযোগ, মোদী সরকার ‘আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি’ হিসেবে আমেরিকা এবং ইউরোপ থেকে কিছু ‘পুতুল’ এনে ডাললেক ঘুরিয়েছে আর গোশতাবা খাইয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘শেষ করব অন্ধকারের যুগ’, ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে ঘোষণা বাইডেনের
তবে সাত মাসের বন্দিত্ব নয়, ন্যাশনাল কনফারেন্সের চেয়ারপার্সনের মনে সবচেয়ে বড় আঘাতের কারণটা অন্য। তাঁর কথায়, ‘‘হঠাৎ অনুভব করলাম, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে আমার কোনও ফারাকই নেই।’’
আবার প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হলে তিনি কী বলবেন?
ফারুক আবদুল্লার জবাব, ‘‘আমি বিনম্র ভাবে প্রধানমন্ত্রীকে আরও সৎ হওয়ার এবং সঠিক ভাবে সত্যের মুখোমুখি হওয়ার অনুরোধ করব। তিনি (মোদী) জানেন, যা করেছেন সেটা ঠিক নয়।’’