ঘরের বাইরে থেকে দম্পতির দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
ছেলেদের সঙ্গে কথা বলা যাবে না! নিজের মেয়েদের উপর এমনই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন এক দম্পতি। আর এর পরিণাম হল মারাত্মক। নিজের বাবা-মাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করল এক কিশোরী। বাবা, মাকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর এলাকার। বৃহস্পতিবার এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এসেছে।
ঘটনাটির সূত্রপাত গত ১৫ মার্চ। সেদিন বাড়ির সামনে থেকে এক দম্পতির রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁদের ৪ কন্যা রয়েছে। দম্পতির দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্তে নামে পুলিশ। এর পরই দম্পতির বড় কন্যার আচরণ সন্দেহজনক লাগে তদন্তকারীদের। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই আসল ঘটনা জানতে পারে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ছেলেদের সঙ্গে মেলামেশা করতে কন্যাদের বারণ করেছিলেন দম্পতি। গত কয়েক দিন ওই কিশোরীকে সেই কারণে স্কুলও যেতে দেননি তাঁরা। বাবা, মায়ের এই কড়া শাসনে ক্ষিপ্ত ছিল কিশোরী।
শিকারপুর থানার স্টেশন হাউস অফিসার প্রেম চাঁদ শর্মা জানিয়েছেন, গত ১৪ মার্চ রাতে এক যুবকের কাছ থেকে ঘুমের ওষুধ কিনেছিল কিশোরী। একটি ওষুধের দোকানে কাজ করতেন ওই যুবক। পরে ওই ওষুধ চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে কিশোরী তার বাবা, মাকে খাওয়ায়। ঘুমের ওষুধ মেশানো চা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন দম্পতি। সেই সময়ই তাঁদের মাথায় কুড়ুল দিয়ে আঘাত করে খুন করে কিশোরী। এর পর ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে তালা দেয় সে। চাবি তার বাবার বালিশের তলায় রেখে পড়শির বারান্দা বেয়ে নিজের ঘরে ঢোকে ওই কিশোরী।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় প্রথমে ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি। ওই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। তার পরই তাকে নিয়ে সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। শেষমেশ জিজ্ঞাসাবাদে কান্নায় ভেঙে পড়ে কিশোরী। খুনের গোটা ঘটনা পুলিশকে জানায়। যে যুবক কিশোরীকে ঘুমের ওষুধ দিয়েছিলেন, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।