ব্যাঙ্ক প্রতারণার তদন্তে সিবিআই
বিজয় মাল্য, মেহুল চোক্সিদের মতো ঋণখেলাপী ব্যবসায়ীদের বিদেশ পালানোর গল্প যেন শেষ হচ্ছে না। কোটি কোটি টাকা ঋণ শোধ না করেই বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন ব্যবসায়ী। অথচ ব্যাঙ্কের টনক নড়ল দু’বছর পর। কানাড়া ব্যাঙ্ক-সহ ৬টি ব্যাঙ্ক থেকে ৩৫০ কোটি টাকা কনসর্টিয়াম ঋণ নিয়েছিলেন ‘পঞ্জাব বাসমতী রাইস’ সংস্থার ডিরেক্টর মনজিৎ সিংহ মাখানি। ২০১৮ সালে তিনি চম্পট দেন কানাডায়। সম্প্রতি এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে ব্যাঙ্ক। বিষয়টির তদন্তে নেমেছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)।
সিবিআই অমৃতসরের ‘পঞ্জাব বাসমতী রাইস’ নামের ওই সংস্থা, তার ডিরেক্টর মনজিৎ সিংহ মাখানি, তাঁর ছেলে কুলবিন্দর সিংহ মাখানি, পুত্রবধূ জসমিত কউর এবং অজ্ঞাত পরিচয় কয়েক জন সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৫০ কোটি টাকার মধ্যে ওই ব্যবসায়ী কানাড়া ব্যাঙ্ক থেকে ১৭৫ কোটি টাকা, অন্ধ্র ব্যাঙ্ক থেকে ৫৩ কোটি টাকা, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে ৪৪ কোটি টাকা, ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অব কমার্স থেকে ২৫ কোটি টাকা, আইডিবিআই থেকে ১৪ কোটি টাকা এবং ইউকো ব্যাঙ্ক থেকে ৪১ কোটি টাকা নিয়েছিলেন। কানাড়া ব্যাঙ্ক তাদের অভিযোগপত্রে জানিয়েছে, ওই সংস্থাটি ২০০৩ সাল থেকেই ঋণ নিচ্ছিল। ২০১২-য় তারা একটি কনসর্টিয়াম ঋণের জন্য আবেদন করে।
কিস্তি দিতে না পারায় ২০১৮-য় ওই ঋণটিকে এনপিএ (নন পারফর্মিং অ্যাসেট) বলে ঘোষণা করে ব্যাঙ্ক। গত বছর মার্চে কানাড়া ব্যাঙ্ক রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে এ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ করে। এ-ও বলে, ব্যাঙ্কের অনুমতি ছাড়াই ওই সংস্থাটি তাদের সম্পত্তি হস্তান্তর করেছে এবং ঋণ শোধ করেনি।
আরও পড়ুন: ইতিহাস সাক্ষী, মুছে যায় বিস্তারবাদীরা: লাদাখে দাঁড়িয়ে চিনকে বার্তা মোদীর
তদন্তে জানা যায়, ওই সংস্থাটি ব্যাঙ্কের কাছে ‘সিকিওরিটি’ হিসাবে দেখানো ২৯১ কোটি টাকার চাল বিক্রি করে দিয়েছে। সেই সংক্রান্ত কোনও রসিদও ব্যাঙ্কের কাছে জমা করেনি। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর, তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। অমৃতসরে সংস্থার অফিস এবং অভিযুক্তদের বাসস্থানেও তল্লাশি চালানো হয়েছে। সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছে, অভিযুক্তদের দেশে ফিরিয়ে আনতে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।