প্রতারিত রমেন্দ্রনারায়ণ চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।
ইউপিআই আইডি তৈরি করে একই গ্রাহকের তিনটে আলাদা ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হল টাকা। এ ভাবেই অনলাইন ব্যাঙ্ক প্রতারণার শিকার হলেন চুঁচুড়া বুড়ো শিবতলার এক বৃদ্ধ। একটি বেসরকারি সংস্থার ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর তিনটি পৃথক ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা প্রতারণাচক্র হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ।
বৃদ্ধ রমেন্দ্রনারায়ণ চক্রবর্তী (৭৫) নামে ওই বৃদ্ধ জানিয়েছেন, শুক্রবার দুপুরে ব্যাঙ্কের কর্মী পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তির ফোন আসে তাঁর কাছে। ফোন করে তাঁকে জানানো হয়, তাঁর এসবিআই ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ডটি ব্লক হয়ে গেছে সেটি চালু করতে হবে। রমেন্দ্র প্রথমে ওই ব্যক্তিকে জানান, তিনি ব্যাঙ্কে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলবেন। ফোনে ওই প্রতারক জানায়, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির জন্য ব্যাঙ্কে ওই সব কাজ হচ্ছে না, ফোনেই জানাতে হবে।
প্রতারক বলে একটি অ্যাপের সাহায্যে বাড়িতে বসেই ডেবিট কার্ড আপডেট হয়ে যাবে। এর পর তার কাছে একটি এসএমএস-এর লিঙ্ক পাঠায় প্রতারক। ওই লিঙ্কে ক্লিক করতেই রমেন্দ্রর মোবাইলে একটি অ্যাপ ডাউনলোড হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে রমেন্দ্র লক্ষ করেন, তাঁর এসবিআই ব্যাঙ্ক একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। এর পর তাঁর এইচডিএফসি এবং কানাড়া ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকেও টাকা কেটে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
সব মিলিয়ে তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা কেটে নেওয়া হয়। রমেন্দ্র জানিয়েছেন, একটি ফোন নম্বর দিয়েই তিনি তিনটে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। শনিবার চুঁচুড়া থানায় এবং চন্দননগর কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম শাখায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
রমেন্দ্রর ছেলে, পেশায় আইনজীবী রাজীব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাবার অবসরের টাকা ছিল তিনটে অ্যাকাউন্টে। বাবা বুঝতেও পারেনি অ্যাপের সাহায্যে তাঁর ফোন হ্যাক করা হয়েছে। এক বার কোনও লেনদেন করলে ওটিপি আসে। বাবা কোনও ওটিপি কাউকে দেননি তা সত্ত্বেও টাকা কেটে নেওয়া হয়। কানাড়া ব্যাঙ্ক থেকে ফোন করে জানালে বুঝতে পারি প্রতারণার কথা। এইচডিএফসি থেকেও ফোন করে টাকা প্রতারণার কথা বলা হয়। তখনও এসবিআই একাউন্ট থেকে কত টাকা প্রতারণা হয়েছে তা জানতে পারিনি। শনিবার সকালেও টাকা কাটা হয়। ইউপিআই আইডি তৈরি করে টাকা সরানো হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, এসবিআই অ্যাকাউন্টটিকে জম্মু ও কাশ্মীর ব্যাঙ্কের সঙ্গে লিঙ্ক করে ‘ফ্লিপকার্ট রেজার পে’-র অনলাইন শপিং-এর মাধ্যমে টাকা সরানো হয়েছে।