বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয় বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিংহ ও তৃতীয় গুলি চালনায় অভিযুক্ত ধীরেন্দ্র সিংহ। ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া। (ফাইল চিত্র)
বালিয়া কাণ্ডে শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। কিন্তু তার আগেই লখিমপুরে ইভটিজিংয়ের দায়ে ধৃত দলীয় কর্মীকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে একেবারে থানায় চড়াও হলেন বিজেপি বিধায়ক। ফলে হিংসা ও নারী সুরক্ষার প্রশ্নে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল।
বৃহস্পতিবার বালিয়ার দুর্জনপুর গ্রামে বছর পঁয়তাল্লিশের জয়প্রকাশ পল গামা নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় বিজেপি নেতা ধীরেন্দ্রপ্রতাপ সিংহের বিরুদ্ধে। রেশন দোকান বণ্টন নিয়ে গোলমালের জেরে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেই সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত এসডিএম, সার্কল অফিসার ও অন্য পুলিশকর্মীদের সাসপেন্ড করেন আদিত্যনাথ।
পরে প্রাক্তন সেনাকর্মী ধীরেন্দ্রপ্রতাপ এক ভিডিয়োতে দাবি করেন, তিনি কোনও অন্যায় করেননি। বরং গোলমালের আশঙ্কায় বাড়তি বাহিনী মোতায়েন করতে পুলিশকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ তা মানেনি। স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিংহও দাবি করেন, ধীরেন্দ্র আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছুড়েছেন।
আজ উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এসটিএফ জানিয়েছে, ধীরেন্দ্র সম্পর্কে তথ্য দিলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। আজ সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ লখনউয়ের পলিটেকনিক এলাকায় এক বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করার সময়ে ধীরেন্দ্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বালিয়া থেকে গ্রেফতার হয়েছেন সন্তোষ যাদব, অমরজিৎ যাদব, অজয় সিংহ ও ধর্মেন্দ্র সিংহ। এই মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, ধীরেন্দ্র বিহারে পালিয়েছিলেন। পরে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে লখনউ আসেন। তাঁকে বালিয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কিন্তু বালিয়া কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ার আগেই লখিমপুরের ঘটনায় বিপাকে পড়েছে যোগী সরকার। এক বিজেপি কর্মীকে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল লখিমপুরের মহম্মদি থানার পুলিশ। অভিযোগ, গত কাল রাত বারোটার পরে থানায় চড়াও হন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক লোকেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ, তাঁর ছেলে ও এক দল বিজেপি কর্মী। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, থানার লকআপের চাবি চায় বিজেপি কর্মীরা। ভয়ে পুলিশকর্মীরা চাবি দিয়ে দেন। অভিযুক্তকে নিয়ে চলে যান বিধায়ক ও তাঁর সহযোগীরা। ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নয় পুলিশ। লোকেন্দ্রপ্রতাপের দাবি, থানায় কোনও গোলমাল হয়নি। তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করতে প্রচার চালানো হচ্ছে।
লখিমপুরের ঘটনার খবর টুইট করে রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার বক্তব্য, ‘‘বিজেপির বেটি বঁচাও কি এখন অপরাধী বঁচাওয়ে পরিণত হয়েছে।’’