CAA

সিএএ: কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়াচ্ছেন সিব্বল ও খুরশিদ

ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেস নেতারা মানছেন, সিব্বল বা খুরশিদ ভুল বলেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:২০
Share:

সলমন খুরশিদ।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু করতে রাজ্যগুলি বাধ্য বলে মন্তব্য করে গত কালই কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন দলের নেতা তথা আইনজীবী কপিল সিব্বল। এ বার তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়ে কংগ্রেসের সমস্যা বাড়িয়ে দিলেন দলের আর এক আইনজীবী নেতা সলমন খুরশিদ। তাঁরও মত, ‘‘সংবিধান অনুযায়ী কোনও রাজ্যের পক্ষে বলা কঠিন, সংসদে পাশ হওয়া কোনও আইন মানবে না।’’ এনসিপি থেকে কংগ্রেসে আসা নেতা তারিক আনোয়ারও বললেন, ‘‘সিব্বল নিশ্চয়ই আইন বুঝেই বলেছেন।’’ এমনকি দিল্লিতে আম আদমি পার্টির সাংসদ ও নেতা সঞ্জয় সিংহও বললেন, ‘‘একেবারে ঠিক বলেছেন কপিল সিব্বল। সংসদে পাশ করা আইন একমাত্র সংসদই বদল করতে পারে।’’

Advertisement

অথচ এই কংগ্রেসই এত দিন ধরে বিরোধী দলের নেতৃত্ব দিয়ে সিএএ-র বিরোধ করে এসেছে। কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের দিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁদের রাজ্যে সিএএ এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) চালু করা হবে না। দিল্লিতে সনিয়া, রাহুল গাঁধীর সামনে এই ঘোষণা করেছেন তাঁরা। প্রশ্ন উঠেছে, সিব্বল ও একাধিক নেতার একই সুরে বক্তব্যের পর কী অবস্থান নেবে কংগ্রেস? কোন মুখেই বা বিরোধিতা করবে?

ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেস নেতারা মানছেন, সিব্বল বা খুরশিদ ভুল বলেননি। সাংবিধানিক ও আইনি দিক ব্যাখ্যা করেছেন মাত্র। কিন্তু কংগ্রেসের লড়াই তো রাজনৈতিক। সিব্বল-খুরশিদদের মন্তব্যে সে লড়াইয়ে ক্ষত তৈরি হয়েছে। আজ সকাল থেকে তাই ক্ষত মেরামতে নেমে পড়ে কংগ্রেস।

Advertisement

কিন্তু সেখানেও বিপত্তি বাধে! খোদ সিব্বল বললেন, ‘‘আমি মনে করি, সিএএ অসাংবিধানিক। এটি প্রত্যাহারের দাবি করে সব রাজ্য প্রস্তাব পাশ করতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট যদি এটিকে ‘সাংবিধানিক’ বলে তা হলে এর বিরোধ করা মুশকিল। লড়াই জারি রাখতে হবে।’’ ক্ষত মেরামত করতে গিয়ে সিব্বল নতুন গোল পাকালেন বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতারাই। কারণ, তিনি বলেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনকে ‘সাংবিধানিক’ বললে রাজ্যের পক্ষে বিরোধ করা কঠিন।

সেটি সামাল দিতে আর এক আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি যুক্তি দিলেন, ‘‘যে হেতু সুপ্রিম কোর্টে এই আইন চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, তার মানেই আইন নিয়ে প্রশ্ন আছে। আর প্রশ্ন থাকলে রাজ্যগুলি কী করে রূপায়ণ করতে পারে? ফলে সুপ্রিম কোর্টের রায় আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হোক।’’ তাতেও ক্ষত না মেটায় আহমেদ পটেল বললেন, ‘‘পঞ্জাবের পরে সিএএ-র বিরুদ্ধে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়েও প্রস্তাব পাশ করে কেন্দ্রকে নতুন করে বিবেচনা করতে বলা হবে।’’

এ সব আইনি কচকচানিতে না গিয়ে আগের মতোই রাজনৈতিক আক্রমণ করে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বললেন, ‘‘সিএএ সংবিধান বিরোধী। সংবিধানের বিরুদ্ধে গিয়ে মোদী-অমিত শাহের বিভাজনের রাজনীতি এখন সকলের সামনে।’’ কংগ্রেসের এই বিড়ম্বনায় খুশি বিজেপি নেতারা বলছেন, ‘‘সত্যটা যখন একবার বলা হয়েই গিয়েছে, তখন সেটি চাপা দিতে এত সক্রিয়তা কেন?’’ আজও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement