Coronavirus Lockdown

২১ দিনে অসংগঠিত ক্ষেত্রের মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে, লকডাউন নিয়ে তোপ রাহুলের

‘অপরিকল্পিত লকডাউন’ অসংগঠিত ক্ষেত্রের উপর তৃতীয় আঘাত বলে মন্তব্য করেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:১৫
Share:

লকডাউন নিয়ে ফের তোপ রাহুল গাঁধীর। —ফাইল চিত্র

করোনা যুদ্ধে ২১ দিনের সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু এখনও করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় অর্থনীতি নিয়ে চতুর্থ ভিডিয়োতে এ ভাবেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করলেন রাহুল গাঁধী। ‘অপরিকল্পিত লকডাউন’ অসংগঠিত ক্ষেত্রের উপর তৃতীয় আঘাত বলে মন্তব্য করে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির কটাক্ষ, ২১ দিনে ‘অসংগঠিত ক্ষেত্রের মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে’।

Advertisement

দেশের অর্থনীতি নিয়ে পর পর ভিডিয়ো বার্তায় মোদী সরকারকে আক্রমণ করছেন রাহুল গাঁধী। আগের তিনটি ভিডিয়োতে নোটবন্দি ও জিএসটি’ নিয়ে মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছেন রাহুল। সরকারের এই দুই সিদ্ধান্তের ফলে অসংগঠিত ক্ষেত্র আগেই কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছিল বলে আক্রমণ শানিয়েছেন রাহুল। তার জেরে গরিব, মধ্যবিত্ত ও ছোট ব্যবসায়ীরা চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছিলেন। এ বার লকডাউন ও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে তোপ দাগলেন কংগ্রেস সাংসদ।

গত ২৫ মার্চ দেশে প্রথম দফায় ২১ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দেশবাসীর কাছে ২১ দিনের সময় চেয়ে নিয়েছিলেন করোনার সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙার জন্য। কিন্তু তাতে সংক্রমণ রোখা যায়নি, উল্টে বাড়তে বাড়তে এখন বিশ্বে সংক্রমণের দিক থেকে ভারত পৌঁছ গিয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। আমেরিকার পরেই। কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের বরাবরের অভিযোগ, কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই আচমকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। তার জেরে বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছে। কাজ হারিয়েছেন কোটি কোটি মানুষ।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘রামমন্দির ভাঙতে এসেছে বাবর’, মুম্বই পুরসভার বিরুদ্ধে আদালতে কঙ্গনা

সেই বিষয়টি নিয়ে রাহুল এ দিন দ্বিমুখী আক্রমণ শানালেন রাহুল গাঁধী। প্রথমত, ২১ দিনের সময় চেয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন নরেন্দ্র মোদী। দ্বিতীয়ত, পরিকল্পনাহীন লকডাউন করে অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিশানা করে ভিডিয়ো বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘‘করোনার নামে যা করেছেন, তা অসংগঠিত ক্ষেত্রের উপর তৃতীয় আক্রমণ। গরিব, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন রোজগার করেন, প্রতিদিন খরচ করেন। আপনি যখন বিনা নোটিসে লকডাউন করলেন, তখন এঁদের উপর আক্রমণ করলেন।’’ তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ২১ দিনের লড়াই হবে। সেই ২১ দিনেই অসংগঠিত ক্ষেত্রের মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে।’’

২০১৯ এর লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহারে ‘ন্যায় যোজনা’ নামে একটি প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন রাহুল। এই প্রকল্পে প্রতি মাসে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল। অন্য দিকে করোনার মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’ প্রকল্পে ২০ লক্ষ কোটির আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু নিম্নবিত্ত, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বা অন্য কাউকেই সরাসরি অর্থসাহায্যের সংস্থান নেই সেই প্রকল্পে। রাহুলের অভিযোগ, করোনার মোকাবিলায় ‘ন্যায় যোজনা’র মতো প্রকল্পের প্রয়োজন থাকলেও সরকার কিছুই করেনি। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউনের পরে খোলার সময় এল। কংগ্রেস সরকারকে বলেছে, গরিবদের সাহায্য করতে হবে। ন্যায় যোজনার মতো কোনও প্রকল্প আনতে হবে। গরিবদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দিতে হবে। কিন্তু করেনি।’’ অর্থসাহায্যের বদলে মোদী শিল্পপতিদের কর মকুব করেছেন বলে রাহুলের অভিযোগ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা বলেছি, ক্ষুদ্র ও ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য একটা প্যাকেজের ব্যবস্থা করুন। এই টাকা না পেলে এঁরা বাচবেন না। সরকার কিছু করেনি। উল্টে সবচেয়ে ধনী ১৫-২০ জন শিল্পপতির বিপুল অঙ্কের কর মকুব করে দিয়েছে।’’

আরও পড়ুন: পাহাড় চুড়ো খুইয়ে যুদ্ধের হুমকি চিনের, ফের গুলি নিয়ন্ত্রণরেখায়

মোটের উপর লকডাউন যে দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে, সেই বার্তা দিয়ে রাহুল বলেছেন, ‘‘লকডাউন করোনার উপর আক্রমণ নয়। দেশের গরিবদের উপর আক্রমণ ছিল। দেশের যুব সমাজের ভবিষ্যতের উপর আক্রমণ ছিল। মজুর, কৃষক, ছোট ব্যবসায়ীদের উপর, অসংগঠিত অর্থ ব্যবস্থার ক্ষেত্রের উপর আক্রমণ ছিল।’’ এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রুখে দাঁড়ানোর আর্জিও জানিয়েছেন রাহুল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement