তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত কাল বাংলাদেশকে যে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন, তার সমালোচনায় মুখর হলেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী সাংসদেরা। তাঁদের কারও বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী নিজে যখন বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন, সেই সময়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কোনও নেতিবাচক কথা বলাটা ঠিক নয়। আবার কেউ বলছেন, দর কষাকষির গোপন অ্যাজেন্ডা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী তিস্তার বদলে তোর্সার কথা বলছেন। উত্তরবঙ্গের নদীগুলির জল বণ্টন নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আগে রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল— এমন কথাও উঠেছে।
বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা হাসিনা সফরের ‘মিনিস্টার ইন ওয়েটিং’ বাবুল সুপ্রিয় আজ জানিয়েছেন, তিস্তা জলবণ্টন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যখন বিবৃতি দিয়েছেন, ঠিক সেই সময়ে প্রকাশ্যে এই নিয়ে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত ছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তিন বার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। রাজ্যকে বাদ দিয়ে কেন্দ্র তিস্তা নিয়ে যে এগোবে না, এটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর এই বিবৃতি দেওয়ার সময় বাছাটা ঠিক হয়নি। বাংলাদেশকে যে বড় হারে সহায়তা দেওয়া হয়েছে, এর ফলে তা চাপা পড়ে গেল।’’
বিজেপির পাশাপাশি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, মমতার এই ধরনের কোনও প্রস্তাব দেওয়ার আগে রাজ্যের বিরোধীদলগুলির সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া উচিত ছিল। এ ব্যাপারে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মমতা কোনও দর কষাকষির চেষ্টা করছেন বলেও মনে করছেন অধীর। বলেছেন, ‘‘এত দিন পর্যন্ত তিস্তার কথা শুনছিলাম, এখন মুখ্যমন্ত্রী তোর্সা এবং আরও কিছু নদীর কথা বলছেন। খাল বিলকে নদী বলা যায় না! প্রধানমন্ত্রী বলছেন তিনি তিস্তা চুক্তি করবেন, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, আমাকে ছাড়া হবে না।’’ অধীর মনে করেন, মমতার নিশ্চয়ই কোনও কোনও গোপন অ্যাজেন্ডা রয়েছে। তিনি হয়তো কোনও প্রতিশ্রুতি আদায় করতে চাইছেন।