সুরেন্দ্রকুমার যাদব। ডান দিকে, এই আদালত কক্ষেই আজ রায়দান। নিজস্ব চিত্র
বিজ্ঞান এবং আইনের ডিগ্রি নিয়ে সুরেন্দ্রকুমার যাদব চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন ফৈজাবাদের অতিরিক্ত মুন্সেফ হিসেবে। যোগী আদিত্যনাথের রাজত্বে এখন গোটা ফৈজাবাদ জেলাই নাম বদলে অযোধ্যা। সেই অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায় দিয়েই বুধবার চাকরি জীবন শেষ করবেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদব।
লখনউয়ের পুরনো হাইকোর্ট ভবনের যে এজলাসে এত বছর বাবরি মসজিদের মামলা চলেছে, তার বাইরে ছোট্ট বোর্ডে লেখা থাকে ‘অযোধ্যা প্রকরণ’। চার দিকে নথি-প্রমাণ, দলিল-দস্তাবেজ ভর্তি। অনেক কাগজই ঝুরঝুরে হয়ে গিয়েছে। করোনার অতিমারির ধাক্কায় লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীরা দিল্লি থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ওই এজলাসেই তার ব্যবস্থা করতে ন্যাশনাল ইনফরমেটিক্স সেন্টারের কর্মীরা হিমশিম খেয়েছেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে যত দ্রুত সম্ভব শুনানি শেষ করেছেন বিচারক যাদব।
গত সেপ্টেম্বরেই বিচারক যাদবের অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বাবরি মামলার রায় ঘোষণা না-হওয়া পর্যন্ত তাঁর চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়। উত্তরপ্রদেশ সরকার তাঁকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক থেকে পদোন্নতি দিয়ে বদলি করেছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাঁকেই বাবরি মামলার শুনানি শেষ করার দায়িত্ব দেওয়ায় বদলি, পদোন্নতিও আটকে যায়। শেষে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে বিচারক যাদব বলেন, বদলি না হোক, অন্তত পদোন্নতিটা হোক। তাঁর সতীর্থ, এমনকি বয়সে ছোটরাও পদোন্নতি পেয়ে জেলা ও দায়রা বিচারক হয়ে গিয়েছেন। আদালত তাঁর পদোন্নতির নির্দেশ দেয়। বুধবার প্রায় তিন দশকের পুরনো মামলার রায় দিয়েই প্রায় তিন দশকের কেরিয়ার শেষ করবেন বিচারক যাদব।
আরও পড়ুন: বাবরি-বিতর্কের ইতিহাস
আরও পড়ুন: এত দিনে বাবরি ধ্বংসের রায়! অক্ষমের উল্লাস ছাড়া আর কী?