বাবরি ধ্বংস মামলায় বিজেপি নেতাদের বেকসুর খালাসের সাজা বহাল ইলাহাবাদ হাই কোর্টে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বাবরি মসজিদ ভাঙার মামলায় বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, উমা ভারতীদের বেকসুর খালাসের নির্দেশ বহাল রাখল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতের রায় বহাল রেখে হাই কোর্ট জানিয়েছে, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের ওই ঘটনার পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র বা পূর্ব পরিকল্পনায় জড়িতে ছিলেন না তাঁরা। আডবাণীদের বেকসুর খালাসের নির্দেশের বিরুদ্ধে অযোধ্যার দুই মুসলিম বাসিন্দা যে আবেদন করেছিলেন বিচারপতি রমেশ সিংহ এবং বিচারপতি সরোজ যাদবের বেঞ্চ তা খারিজ করে দিয়েছে।
২০২০-র ৩০ সেপ্টেম্বর লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক সুরেন্দ্রকুমার তাঁর রায় ঘোষণা করে জানিয়েছিলেন, করসেবকদের হামলায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র বা পূর্ব পরিকল্পনা ছিল না। গোটাটাই ‘হঠাৎ ঘটে যাওয়া’ স্বতঃস্ফূর্ত জনরোষের ফল। ঘটনায় মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ছিল ৪৯। এর মধ্যে মামলা চলাকালীন কয়েক জনের মৃত্যু হয়।
আডবাণী, জোশী, উমা-সহ বাকি ৩২ জনের সে দিনের ভূমিকায় কোনও অপরাধ খুঁজে পায়নি সিবিআই আদালত। উল্টে উন্মত্ত জনতাকে তাঁরা আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন বলেও বলা হয়েছিল রায়ে। যদিও ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদনকারীরা দাবি করেছিলেন, রীতিমতো পরিকল্পনা করেই বাবরি ধ্বংসের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। পরিকল্পনা মাফিক সে দিন শাবল-গাঁইতি নিয়ে তাঁরা জড়ো হয়েছিলেন। হাই কোর্টে মামলা চলাকালীন মৃত্যু হয় অন্যতম অভিযুক্ত, বাবরি ধ্বংসের সময় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকা কল্যাণ সিংহের।
সিবিআই কোর্টের রায়ের আগেই সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যার বিতর্কিত জমির মামলায় জয় পায় হিন্দুত্ববাদী পক্ষ। ২০২০-র ৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই জমিতে গিয়ে রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এই শিলান্যাস-উত্তর এই পরিস্থিতিতে আডবাণী-জোশী-উমা ভারতীদের বিচারের আদৌ কোনও তাৎপর্য অবশিষ্ট ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এ বার হাই কোর্ট জানিয়ে দিল ‘দোষ কারও নয়’।