নিহত নেতা বাবা সিদ্দিকি। — ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা (অজিত পওয়ার গোষ্ঠী) বাবা সিদ্দিকিকে খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুই আততায়ী-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। এ বার অভিযুক্তদের দীর্ঘ জেরার পর জানা গেল, ইউটিউব ভিডিয়ো দেখে গুলি চালানোর মহড়া দিতেন বাবা সিদ্দিকির খুনিরা! এমনটাই জানিয়েছে মুম্বই পুলিশ।
ঘটনায় প্রথম যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়, তাঁদের নাম গুরমেল সিংহ এবং ধর্মরাজ কাশ্যপ। দু’জনেরই বয়স ২০-র কোঠায়। এক জন উত্তরপ্রদেশ, অন্য জন হরিয়ানার বাসিন্দা। জেরায় তাঁরা জানিয়েছেন, ইউটিউব ভিডিয়ো দেখেই নাকি বন্দুক চালানো শিখেছিলেন তাঁরা! ম্যাগাজ়িন ছাড়া নিয়মিত মহড়া দিয়েছেন ইউটিউবের সাহায্য নিয়েই। সিদ্দিকি ও তাঁর পুত্র জিশানকে হত্যায় তাঁদের সুপারি দেওয়া হয়েছিল। খুনের দিন কয়েক আগেই দু’জনে হাতে পেয়ে গিয়েছিলেন আগাম এক লক্ষ টাকা। পেয়েছিলেন আগ্নেয়াস্ত্রও। খুনের মহড়া দেওয়ার জন্য কুরলায় বাড়ি ভাড়াও নেন গুরমেল ও ধর্মরাজ। ঘটনাস্থল একাধিক বার ‘রেকি’ করতে যান দু’জনে। আটঘাট বেঁধেই শেষমেশ নিখুঁত ভাবে কাজ সারেন তাঁরা।
সিদ্দিকি খুনে মুম্বইয়ের গ্যাংস্টার লরেন্স বিশ্নোইয়ের যোগ রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিল পুলিশ। জেরার মুখে দুই ধৃতই বিশ্নোই গ্যাংয়ের সঙ্গে তাঁদের যোগের কথা স্বীকার করে নিয়েছে। জল্পনা, এই খুনের জন্য মোট ২৫ লক্ষ টাকার বরাত পেয়েছিল বিশ্নোই গ্যাং। সমাজমাধ্যমে সিদ্দিকি খুনে বিশ্নোই-যোগ নিয়ে পোস্ট করে গ্রেফতার হয়েছেন পুণের আরও এক ব্যক্তি। উত্তরপ্রদেশের বহরাইচ থেকে গ্রেফতার হয়েছেন হরিশকুমার নামে এক তরুণও। তবে বাকি তিন অভিযুক্ত এখনও পলাতক। তাঁদের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান।
শনিবার রাতে নির্মল নগরে নিজের অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় এনসিপি (অজিত) নেতা সিদ্দিকিকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি চলে। রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয় তাঁর। ৯.৯ এমএম পিস্তল থেকে ছোড়া হয়েছিল গুলি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়ি করে তিন জন দুষ্কৃতী এসেছিল। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। শনিবারই শিন্ডে ঘোষণা করেন, এই হত্যা মামলার বিচার ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে হবে। এনকাউন্টার বিশেষজ্ঞ দয়া নায়েক ঘটনার তদন্ত করবেন। সঙ্গে মুম্বই পুলিশকে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।