কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা দক্ষিণে বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা। ফাইল চিত্র।
ভোটের রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ালেও তিনি যে বিজেপিকে জেতাতে সক্রিয় ভাবে প্রচারে অংশ নেবেন, সে কথা ফের স্পষ্ট করে দিলেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা দক্ষিণে বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা। একটি সাক্ষাৎকারে এ কথা স্পষ্ট করে দিয়ে তাঁর বক্তব্য, তাঁকে ছাড়াই যে আগামী দিনে চলতে হবে, সেটা বিজেপি নেতাদের বুঝতে হবে। না হলে সমস্যা হবে। কারণ তিনি কোনও অবস্থাতেই নিজের সিদ্ধান্ত বদলাবেন না। পাশাপাশি দলের শীর্ষ নেতাদের মেরুকরণের অঙ্কে টিপু বনাম সাভারকর তত্ত্বে তিনি যে আগ্রহী নন, তা-ও স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন লিঙ্গায়েত সমাজের প্রভাবশালী এই নেতা।
দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার কর্নাটকের বিজেপি সরকার। দলে ডি কে শিবকুমার বনাম সিদ্দারামাইয়ার বিরোধ থাকলেও রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র পরে উজ্জীবিত রাজ্য কংগ্রেস দুর্নীতি প্রশ্নে বিজেপির উপরে চাপ বাড়িয়েছে। যে কোনও সরকারি কাজের জন্য ৪০ শতাংশ কমিশন দিতে হয় বলে ওঠা অভিযোগকে হাতিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী বোম্মাইকে জনপ্রিয় অ্যাপের অনুকরণে ‘পেসিএম’ বলে প্রচারে নেমেছে তারা। এই অবস্থায় মেরুকরণকেই হাতিয়ার করতে চাইছে মরিয়া বিজেপি।
গত মাসেই কর্নাটক সফরে গিয়ে ভোটের বাদ্যি বাজাতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইঙ্গিত দিয়েছেন, কর্নাটকে বিধানসভা ভোট হবে টিপু সুলতান বনাম হিন্দুত্বের প্রশ্নে। কর্নাটক বিজেপির সভাপতি নিতিন কাটিলও জানিয়েছেন, টিপু সুলতান বনাম সাভারকর অঙ্কে ভোট হবে কর্নাটকে। কিন্তু ভোটে এমন অঙ্ক মানতে নারাজ ইয়েদুরাপ্পা। অমিত শাহের তত্ত্বকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কর্নাটকের সবচেয়ে বেশি বারের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘টিপু বনাম সাভারকর তত্ত্ব আমি মানি না। আমি মনে করি, ভোট হবে বিজেপির নীতি এবং বিভিন্ন প্রকল্প ঘিরে।’’
নিজে দুর্নীতির অভিযোগে জেলে গেলেও ভোটের প্রচারে কংগ্রেসের নেতাদের দুর্নীতি নিয়ে তিনি সরব হবেন বলে জানিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা। তাঁর এই চেষ্টা বিজেপির বিপদ বাড়াবে বলেই আশঙ্কা দলের একাংশের। তাঁরা মনে করছেন, এমনিতেই দুর্নীতি, কেলেঙ্কারিতে জেরবার কর্নাটকের বিজেপি সরকার। তিনি হিন্দুত্ব-মেরুকরণ ছেড়ে দুর্নীতি নিয়ে প্রচার করলে সুবিধা হবে কংগ্রেসেরই।