অযোধ্যায় রামমন্দিরের নির্মাণকাজ চলছে পুরোদমে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
‘বিরাসত’ ও ‘বিকাশ’। ঐতিহ্য ও উন্নয়ন।
এক দিকে, আগামী বছরের গোড়ায় অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির কাজ শেষ হবে বলে আগাম প্রচার। অন্য দিকে নয় বছরের কাজের খতিয়ান।
আজ কেন্দ্রে মোদী সরকার নয় বছর পূর্ণ করেছে। সেই উপলক্ষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির শীর্ষনেতারা দিল্লি-সহ গোটা দেশে সাংবাদিক বৈঠক করে নয় বছরের উন্নয়নের তালিকা তুলে ধরছেন। শেষে নির্মীয়মাণ রামমন্দিরের ছবি দেখিয়ে বলছেন, আগামী বছরই রামমন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হবে। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, নয় বছরে মোদী সরকার উন্নয়নের কাজ করেছে। তেমনই ভারতের ‘সনাতনী ঐতিহ্য’ ধরে রাখার কাজও করেছে। তারই প্রধান প্রতীক হল রামমন্দির।
ঘটনাচক্রে, মোদী সরকারের নয় বছর পূর্তির সকালেই মহিলা কুস্তিগিররা গঙ্গায় তাঁদের পদক বিসর্জন নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তা স্থগিত রাখা হয়, কেন্দ্রকে পাঁচ দিন সময় দিয়ে। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, যে মোদী সরকার মহিলাদের সম্মান রক্ষা করতে পারে না, তারা কোন ঐতিহ্যের কথা বলছে? বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ সিংহের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ টুইট করে বলেছেন, তাঁর সরকারের যাবতীয় পদক্ষেপ মানুষের জীবনের উন্নতি আনার লক্ষ্যে করা হয়েছে। মোদী বলেছেন, ‘‘আজ যখন আমরা দেশ সেবায় নয় বছর পূর্ণ করছি, আমার মন নম্রতা ও কৃতজ্ঞতায় ভরে উঠছে। উন্নত ভারতের লক্ষ্যে আরও পরিশ্রম করব।’’ বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, লোকসভা ভোটের আগে শেষ বছরে সরকারের সাফল্যের প্রধান মাইলফলক হবে রামমন্দির।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই ঘোষণা করেছিলেন, ২০২৪-এর ১ জানুয়ারির মধ্যে রামমন্দির তৈরির কাজ শেষ হয়ে যাবে। তারপরে মকরসংক্রান্তিতে মন্দির উদ্বোধন হবে। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছে, লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে রামমন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে দেশে উন্মাদনা তৈরি হবে। বিজেপির ইতিহাসেই নতুন মাইলফলক তৈরি হবে। গত পাঁচ দশকে সঙ্ঘ পরিবারের রামমন্দির আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেবে। রামমন্দির উদ্বোধনকে ঘিরে প্রচার কী ভাবে তুঙ্গে নিয়ে যাওয়া যায়, ও ধর্মীয় ভাবাবেগকে কী ভাবে উস্কে দেওয়া যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিজেপির পাশাপাশি বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দলও কর্মসূচি তৈরি করছে।
উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন সূত্রের খবর, লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই পুরো মন্দিরের কাজ শেষ হওয়ার আগে রামলালাকে গর্ভগৃহে প্রতিষ্ঠা করে মন্দির খুলে দেওয়া হবে। মন্দিরের একতলার কাজ শেষ হলেও উপরের অংশের কাজ বাকি থাকবে। গোটা মন্দির চত্বরের কাজ শেষ হতে ২০২৫ সাল হয়ে যাবে। লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই তত দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা হচ্ছে না। মন্দিরের কাজ ও অযোধ্যার পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ দেখভালের জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকারের পূর্তমন্ত্রী জিতিন প্রসাদ নিয়মিত অযোধ্যা যাচ্ছেন। জিতিন বলেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে আমাদের সকলের উপরেই রামলালার আশীর্বাদ বর্ষিত হবে।’’