অযোধ্যায় মন্দিরের পুরোহিতের রহস্যমৃত্যু। — ফাইল ছবি।
অযোধ্যার হনুমানগড়হী মন্দিরের অন্যতম পুরোহিতের গলাকাটা দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য। বৃহস্পতিবার সকালে কড়া নিরাপত্তার বেড়াজালে মোড়া রাম জন্মভূমি চত্বরের মধ্যে থেকেই তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁকে খুন করা হয়েছে। সন্দেহের তির ৪৪ বছর বয়সি পুরোহিতের দুই শিষ্যের দিকে। পুলিশ এক শিষ্যকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে। অপর শিষ্য পলাতক।
অযোধ্যার রামমন্দির চত্বরেই রয়েছে হনুমানগড়হী মন্দির। সেই মন্দিরের অন্যতম পুরোহিত রাম সহারে দাস। থাকেন মন্দির চত্বরেরই ভিতরে একটি ঘরে। বৃহস্পতিবার সকালে সকলে প্রার্থনার জন্য ঘর থেকে বেরোলেও রাম সহারের দেখা মেলেনি। তখন তাঁকে ডাকতে তাঁর ঘরে যান কয়েক জন পুরোহিত। তাঁরা দেখেন, ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে রাম সহারের নিথর দেহ। এই ঘটনায় হইচই পড়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত চলে আসে পুলিশ। সিনিয়র পুলিশ সুপার রাজকরণ নাইয়ার জানিয়েছেন, হনুমানগড়হি মন্দির থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে একটি বাড়িতে থাকতেন রাম সহায়। সঙ্গেই থাকতেন তাঁর দুই শিষ্য। পুলিশ জানতে পেরেছে, বুধবার রাতে দুই শিষ্যের সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে মতবিরোধ হয় রাম সহায়ের। তারই ফলশ্রুতিতে খুন কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সন্দেহভাজনের তালিকায় রয়েছেন রাম সহায়ের দুই শিষ্যই। এক শিষ্যকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অপর শিষ্যের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর খোঁজে পুলিশের চারটি দল তল্লাশি শুরু করেছে।
পুলিশ আধিকারিক নাইয়ার জানিয়েছেন, সকাল ৭টা নাগাদ তাঁরা খুনের ঘটনার খবর পান। তার পরে মন্দিরে এসে দেখেন, রাম সহায়ের গলাকাটা দেহ মেঝেতে পড়ে রয়েছে। মাটি ভেসে যাচ্ছে রক্তে। সকালের প্রার্থনায় গরহাজির থাকায় রাম সহায়ের খোঁজ শুরু হয়। তখনই দেখা যায়, মৃত্যু হয়েছে তাঁর। নাইয়ারের আরও দাবি, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে বোঝা গিয়েছে, মন্দিরে কেউ ঢোকেননি। ফলে মন্দির চত্বরের ভিতরের কেউই যে রাম সহায়কে খুন করেছেন, তা নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত পুলিশ। খুনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল ধারাল অস্ত্র।
শিষ্যকে জেরা করে পুলিশ এখন জানার চেষ্টা করছে, ঠিক কী বিষয়ে শিষ্যদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিলেন রাম সহায়। সেই লক্ষ্যে তাঁর এক শিষ্যকে জেরা চলছে। পলাতক অপর শিষ্যকেও খুব দ্রুত ধরে ফেলা যাবে বলে আশাবাদী পুলিশ। তবে, পুজোর মধ্যে এই ঘটনায় অযোধ্যায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।