অযোধ্যার রামমন্দিরে দর্শনার্থীদের ঢল। ছবি: পিটিআই।
অযোধ্যা, ২৫ জানুয়ারি: ভিড় সামলাতে এ বার থেকে ভোর ৬টায় দরজা খুলবে অযোধ্যার রামমন্দির। বন্ধ হবে একেবারে রাত ১০টায়। প্রথমে এই সময়সীমা ছিল সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। মাঝখানে দু’ঘণ্টার বিরতি। কিন্তু আমজনতার জন্য দরজা খোলার পরেই ভিড়ের চাপে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা ছড়ায় রামমন্দির চত্বরে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদেরও আপাতত অযোধ্যাযাত্রা মুলতুবি রাখতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনও একাধিক পদক্ষেপ করে। বন্ধ রাখা হয় অযোধ্যাগামী বাস।
যানজট এড়াতে অযোধ্যা পৌঁছনোর মূল সড়কগুলিই আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অযোধ্যার কমিশনার গৌরব দয়াল জানান, আশেপাশের জেলা থেকে কোনও গাড়ি অযোধ্যায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তবু উত্তরপ্রদেশের এই মন্দির-শহরে এখন কাতারে কাতারে লোক। গাড়ি না থাকলেও স্রেফ ১০-১৫ কিলোমিটার হেঁটে অনেকে অযোধ্যায় চলে আসছেন রামলালা দর্শনে। অনেকে আবার এসেছেন পৌষ পূর্ণিমা উপলক্ষে। প্রবল ঠান্ডা ও কুয়াশার মধ্যেই সরযূতে ডুব দিয়েছেন।
রামমন্দির ঘিরে পুলিশ-আধাসেনা থিকথিক। আরতির জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৫ মিনিট। ভোগ বিতরণ শুরু বেলা ১২টায়। হিমাচল বিজেপি আবার আগামিকাল পর্যন্ত লঙ্গর চালাবে অযোধ্যায়। রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য অনিল মিশ্র জানালেন, শুধু প্রথম দিনেই মন্দিরের ১০টি কাউন্টারে ভক্তেরা দান করেছেন ৩.১৭ কোটি টাকা। মন্দির নির্মাণ পুরো শেষ হতে ঢের দেরি ঠিকই। কিন্তু মন্দির সংলগ্ন এলাকায় জমি-বাড়ির দাম শুধুমাত্র গত তিন মাসেই ১৭৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে বলে কারবারিদের একাংশ জানাচ্ছেন!
ভ্রমণের সব ক’টি ওয়েবসাইটেই ‘অযোধ্যা’ দিয়ে সার্চ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। পর্যটন ব্যবসায়ীদের মতে, বিদেশিদের যাতায়াতও দ্রুত বাড়বে অযোধ্যায়। এরই মধ্যে খবর, মধুচন্দ্রিমায় গোয়া ও দক্ষিণ ভারত নিয়ে যাবেন বলে কথা দিয়েও এক ব্যক্তি তাঁর নববিবাহিতা স্ত্রীকে শেষ পর্যন্ত অযোধ্যায় নিয়ে চলে এসেছিলেন। স্ত্রী এখন বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেছেন। লুকিয়ে বিমানের টিকিট কেটেছিলেন ভোপালের ওই ব্যক্তি। যাত্রার আগের দিন স্ত্রীকে জানান, গোয়ার বদলে সবাই মিলে অযোধ্যা-বারাণসী যাচ্ছেন! কারণ, তাঁর মায়ের মায়ের অযোধ্যা দেখার শখ বহু দিনের।
টুকরো খবর আরও আছে। রামলালার মূর্তি তৈরি করা শিল্পী অরুণ যোগীরাজ গত কাল বাড়ি ফেরার পথে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে নামার পরে উৎসাহীদের ভিড়ে কার্যত ঘেরাও হয়ে যান। সিআইএসএফ কোনও মতে তাঁকে বার করে এনে অপেক্ষারত পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়।
সংবাদ সংস্থা