পুলিশের গুলিতে হত দুই হামলাকারী। ছবি সৌজন্য টুইটার।
পর পর বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি, পাল্টা গুলি। তার পরই আদালত কক্ষ ভরে উঠল রক্তে। এক পাশে ছিটকে পড়ে আছে কুখ্যাত গ্যাংস্টার গোগী। রক্তে ভিজে যাচ্ছিল মেঝে। তার ঠিক কয়েক হাত দূরেই নিথর হয়ে পড়ে ছিল আইনজীবীর পোশাক পরা আরও দু’জনের দেহ। মাত্র কয়েক মিনিটের গুলির যুদ্ধ। শুক্রবার দুপুরে দিল্লির রোহিণীর আদালত চত্বরের দৃশ্যটা ছিল ঠিক এ রকমই।
দুপুর পৌনে ২টো। আদালত চত্বরে পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যান এসে দাঁড়াল। ভিতর থেকে নেমে এল কুখ্যাত গ্যাংস্টার গোগী। সঙ্গে কয়েক জন পুলিশকর্মী। তড়িঘড়ি গোগীকে নিয়ে সোজা আদালত কক্ষে ঢুকে যান তাঁরা।
গোগীর বিরুদ্ধে একটি মামলার শুনানি ছিল শুক্রবার। আদালতের ২০৭ নম্বর ঘরে সেই শুনানি চলছিল বিচারপতি গগনদীপ সিংহের এজলাসে। আদালতকক্ষ তখন একটু একটু করে ভরে উঠেছে। এ পাশে ও পাশে দাঁড়িয়ে কয়েক জন আইনজীবী। কিন্তু আইনজীবীদের বেশেই যে ওই ভিড়ের মধ্যে গোগীর বিরোধী গোষ্ঠী টিল্লুর লোকেরা হাজির ছিল সেটা আদালতের কেউই আঁচ করতে পারেননি। বলা ভাল, কারও ধারণাতেই আসেনি যে আইনজীবীর বেশে সাক্ষাৎ যমের মতো হাজির গোগীর উপর হামলাকারীরা। দুষ্কৃতীরা জানত, আইনজীবীর বেশে গেলে কেউ টেরই পাবেন না। তা ছাড়া আদালত চত্বরে প্রবেশ করা আরও সহজ হবে। আর হলও তাই। নিঃশব্দে সকলের অলক্ষে আগে থেকেই ২০৭ নম্বর ঘরে ঢুকে শিকারের জন্য অপেক্ষা করছিল তারা।
সবে শুনানি শুরু হয়েছে। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গোগী। সওয়াল জবাবের মধ্যেই হঠাৎ আইনজীবীর বেশে থাকা দুই হামলাকারী কাঠগড়ার কাছে চলে আসে। তার পরই বন্দুক বার করে গোগীকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি চালায়। তিনটি গুলি লাগে গোগীর শরীরে। রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়ে গোগী। দুই হামলাকারীকে তত ক্ষণে ঘিরে ফেলে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলও। আদালত কক্ষে এ রকম পরিস্থিতিতে উপস্থিত সকলেই নিজেদের প্রাণ রক্ষায় যে যেখানে পেরেছেন লুকিয়ে পড়েন।
গুলির লড়াই আরও বাড়তে শুরু করে। কক্ষের বাইরে থেকে পুলিশ গুলি চালাচ্ছিল দুই হামলাকারীকে লক্ষ্য করে। পাল্টা হামলাকারীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। ২৫-৩০ রাউন্ড গুলি চলার পর দেখা যায়, আদালত কক্ষের ভিতরে পড়ে রয়েছে দুই হামলাকারী। চারপাশ রক্তে ভেসে যাচ্ছে। এ ভাবেই মুহূর্তে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল রোহিণীর আদালত।