আতিককে খুনের পরিকল্পনা ছিল আগের দিন, কেন ‘অ্যাকশন’ হল না সে দিন? — ফাইল ছবি।
গত ১৫ এপ্রিল, শুক্রবার, প্রয়াগরাজের একটি সরকারি হাসপাতালে সামনে পুলিশের ঘোরাটোপের মধ্যে খুন হন গ্যাংস্টার থেকে রাজনৈতিক নেতা হওয়া আতিক আহমেদ এবং তাঁর ভাই আশরাফ। কিন্তু দুষ্কৃতীদের পরিকল্পনা ছিল তার আগের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই কাজ সেরে ফেলার। যদিও কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনী দেখে ‘অ্যাকশন’ মুলতুবি রেখেই ফিরতে হয় লভলেশ তিওয়ারি, অরুণ মৌর্য এবং সানি সিংহকে। সূত্রকে উদ্ধৃত করে এমনই দাবি করা হয়েছে ইন্ডিয়া টুডের একটি প্রতিবেদনে।
গত শুক্রবার হাসপাতাল চত্বরে খুন হন আতিক এবং আশরাফ। কিন্তু সূত্রের দাবি, শুক্রবার নয়, আতিকদের খুনের দিনক্ষণ বেছে নেওয়া হয়েছিল বৃহস্পতিবার। সে দিন আতিকদের প্রয়াগরাজ আদালতে তোলা হয়েছিল। সেই সময়ই আহমেদ ভাইদের খুন করার কথা ছিল দুষ্কৃতীদের। কিন্তু আদালত চত্বরে পুলিশি নিরাপত্তার বহর দেখে ফিরে যায় দুষ্কৃতীরা। তার পর থেকেই আবার সুযোগ খোঁজা শুরু হয়। সুযোগ মেলে তার পর দিনই, হাসপাতাল চত্বরে। পুলিশের চোখের সামনে সাংবাদিকের ছদ্মবেশে তিন দুষ্কৃতী পর পর গুলি চালায় আতিক ও তাঁর ভাইকে লক্ষ্য করে। সেখানেই মৃত্যু হয় দু’জনের। মৃত্যু নিশ্চিত হতেই আত্মসমর্পণ করে তিন দুষ্কৃতী। গুলি চালনার সময় তাঁদের মুখে ছিল জয় শ্রীরাম ধ্বনি। মাত্র ২২ সেকেন্ডের মধ্যে তিন আততায়ীর বন্দুক থেকে এক ডজনেরও বেশি গুলি চলে। তাতেই ঝাঁঝরা হয়ে যান আতিক এবং তাঁর ভাই।
পুলিশি ঘেরাটোপে থাকা অবস্থায় কী করে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে দেশ জুড়ে প্রশ্ন উঠছে। পুলিশের কর্তব্যে গাফিলতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আদিত্যনাথের রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ তুলছে বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, আতিকের মতো একজন ‘হাই প্রোফাইল’ বন্দির নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় সত্যিই কি গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হয়েছিল?
এখনও পর্যন্ত পুলিশি তদন্তে যা উঠে এসেছে তার মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল, খুনে ব্যবহৃত বন্দুকটি। তুরস্কে তৈরি ওই বন্দুকের দাম লক্ষাধিক টাকা। সেই টাকা আততায়ীরা পেলেন কোথায়? পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃত সানি জানিয়েছেন, ২০২১ সালে এক গ্যাংস্টার তাঁকে এই বন্দুক ব্যবহার করতে দেন। সানির আরও দাবি, ২০২১-এর ডিসেম্বরেই সেই গ্যাংস্টারের মৃত্যু হয়েছে। ধৃত আততায়ীদের দেওয়া বয়ান কতখানি সত্যি আর কতটা মিথ্যা, তা যাচাই করতে নারকো পরীক্ষার মুখে তাঁদের বসাতে চায় পুলিশ।