ফাইল চিত্র।
রাজ্যে আসন্ন বাজেট অধিবেশনের আগে পুরনো অধিবেশন সমাপ্ত বলে ঘোষণা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পরিষদীয় দফতর থেকে পাঠানো বিধানসভার অধিবেশন সংক্রান্ত ফাইলে সই করে শনিবার রাজ্যপাল নিজেই তা টুইট করে জানিয়েছেন। নবান্ন এবং বিধানসভার সঙ্গে রাজভবনের সংঘাত চলছে বেশ কিছু দিন ধরে। এই আবহে ধনখড়ের টুইটের পরে প্রাথমিক ভাবে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, রাজ্যপাল বিধানসভাকে এড়িয়ে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে কোনও পদক্ষেপ করলেন কি না। কিন্তু সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকার পক্ষের পাঠানো ফাইলেই তিনি সই করেছেন। পরে ধনখড় নিজেও টুইট করে স্পষ্ট করে দেন, তিনি সরকারি সুপারিশ অনুযায়ীই কাজ করেছেন।
ইদানীং কালে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন সমাপ্তি (পরিভাষায় ‘প্রোরগ’) করা হয় না, অনির্দিষ্ট কালের জন্য মুলতুবি (পরিভাষায় ‘সাইনে ডাই’) রাখা থাকে। রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে বিধানসভার দু’বার অধিবেশন হয়ে গেলেও তা অনির্দিষ্ট কাল মুলতুবিই রাখা ছিল। এই প্রক্রিয়ায় অধিবেশন ফের শুরু করতে গেলে রাজ্যপালের অনুমোদন লাগে না, স্পিকার নিজেই বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারেন। সরকারের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাতের প্রেক্ষিতে রাজ্যপালকে এড়িয়ে যেতেই এমন কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, বাজেট অধিবেশন সংসদের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি এবং বিধানসভার ক্ষেত্রে রাজ্যপালের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শুরু করতে হয়। আগের অধিবেশন সমাপ্ত না হলে রাজ্যপালের মাধ্যমে নতুন অধিবেশন ডাকা সম্ভব নয়। তাই রাজ্যপালকেই অধিবেশন সমাপ্তি ঘোষণা করতে হত এবং তিনি তা-ই করেছেন। যাকে ‘রুটিন’ বলেই জানাচ্ছে পরিষদীয় মহল। তবে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, অধিবেশন সমাপ্তির বিজ্ঞপ্তি বিধানসভার কাছেই আসে। সেই ‘রুটিন’ বিষয়ে আগেভাগে টুইট করে রাজ্যপাল প্রচার পাওয়ার চেষ্টা করেছেন কি না, তা তাঁর জানা নেই!
রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, রাজ্যপাল বিধানসভার ফাইল আটকে রাখেন বলে সাম্প্রতিক কালে অভিযোগ করেছে শাসক পক্ষ। রাজ্যপাল এ বার টুইট করে বার্তা দিতে চেয়েছেন, বিধানসভার সব ফাইল তাঁর কাছে আটকে থাকে না। সরকারি সূত্রের খবর, মার্চের গোড়াতেই বিধানসভার বাজেট অধিবেশন জারি হবে। তার জন্য বিজ্ঞপ্তির সুপারিশ রাজভবনে পাঠানো হবে শীঘ্রই।