হিমাচলে ভোটের দিন ঘোষণা করছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। ছবি: পিটিআই।
ঠিক ১০ বছর আগে, ২০১২ সালে ইউপিএ সরকারের জমানায় একই দিনে গুজরাত এবং হিমাচল প্রদেশের ভোট ঘোষণা হয়েছিল। তা হলে শুক্রবার গুজরাতে ভোটের দিন ঘোষণা করা হল না কেন?
শুক্রবার ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার বলেছেন, ‘‘গুজরাতে বর্তমান বিধানসভার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। হিমাচল প্রদেশ বিধানসভার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩-এর ৮ জানুয়ারি। তাই হিমাচলে ভোটের ঘোষণা প্রথমে করা হয়েছে।’’ হিমালয় ঘেরা ওই পাহাড়ি রাজ্যে শীতের আগে ভোট করা প্রয়োজন ছিল বলেও কমিশনের একটি অংশ জানিয়েছে। কিন্তু ভোটের নির্ঘণ্ট নয়, প্রশ্ন উঠেছে এক সঙ্গে ভোটের ঘোষণা না করা নিয়ে।
এ ক্ষেত্রে ৫ বছর আগের অর্থাৎ ২০১৭ সালের ‘অভিজ্ঞতা’ থেকে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, আগামী দু’সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিক ভাবে নিজের রাজ্যে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে প্রকল্প ঘোষণার সুযোগ করে দিতে কমিশনের এই পদক্ষেপ। কারণ, ভোটের দিন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়ে যায়। তখন আর নতুন প্রকল্প ঘোষণা করা যায় না।
মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে ২০১৭ সালে এমনই ‘ছবি’ দেখা গিয়েছিল। সে বার ১২ অক্টোবর হিমাচলে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। গুজরাতের ভোট ঘোষণা হয়েছিল আরও প্রায় দু’সপ্তাহ পরে, ২৫ অক্টোবর। যদিও দু’টি রাজ্যের ভোটের গণনা হয়েছিল একই দিনে— ১৮ ডিসেম্বর! আর দু’রাজ্যের ভোট ঘোষণার মাঝের সেই সময়টুকুতে পটেল আন্দোলনে উত্তপ্ত গুজরাতে ‘উন্নয়নের ঝোড়ো ইনিংস’ খেলেছিলেন মোদী। চলেছিল একের পর এক প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস এবং অঙ্গীকার।
কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা ২০১৭-তে অভিযোগ তুলেছিল, ওই দু’সপ্তাহ ধরে ‘মিথ্যে প্রতিশ্রুতির বৃষ্টি’ হয়েছিল গুজরাতে। যদিও চাপের মুখেও সে বার ভোটে জিতে এসেছিল বিজেপি। কিন্তু তাতে বিরোধীদের তোলা প্রশ্নে সারবত্তা হারিয়ে যায়নি— ২০০৭ এবং ২০১২-য় হিমাচল-গুজরাতে এক সঙ্গে ভোট ঘোষণা হলে, মোদী জমানায় বাধা কোথায়?