—প্রতীকী ছবি।
রেকর্ড গড়ে বিজেপির চিন্তা বাড়াল মধ্যপ্রদেশ। আত্মবিশ্বাস বাড়াল কংগ্রেসের। কয়েক দশকের মধ্যে এত ভোট পড়েনি এই রাজ্যে। গত বার ৭২ শতাংশের বেশি ভোটেই উড়ে গিয়েছিল কংগ্রেস। আর এ বারে বিজেপি-বিরোধী হাওয়ায় সন্ধে ছ’টার হিসেবেই পড়ে গিয়েছে ৭৫ শতাংশ ভোট। কংগ্রেসের কমলনাথ বললেন, ‘‘যাক, শান্তিতে দু’টি বিষয় শেষ হল। একটি ভোট, অন্যটি শিবরাজসিংহ চৌহানের শাসন। প্রথমে ভেবেছিলাম, কংগ্রেস ১৪০টি আসন পাবে। এ বারে আরও বিস্ময়ের অপেক্ষা।’’
মধ্যপ্রদেশের ২৩০টি আসনের মধ্যে বিজেপি গত বার পেয়েছিল ১৬৫টি, কংগ্রেস ৫৮টি। দু’দলের ভোট শতাংশের ফারাক ছিল ৯ শতাংশ। ৪-৫ শতাংশ ভোট ঘুরলেই বিজেপিকে এ বার কুপোকাত করতে পারে কংগ্রেস। বিজেপি হিসেব কষে চলেছে। ঘরোয়া মহলে বলছে, গত বার ৩ শতাংশ ভোট বেড়েছিল। তাতে বিজেপির আসন বেড়েছিল ২০টি। এ বারও বাড়তি ভোট বিজেপির পক্ষেই পড়েছে। ঘরে-ঘরে গিয়ে মানুষকে ভোটমুখী করেছে আমিত শাহের বাহিনী। তবু চিন্তায় বিজেপি। বাড়তি ভোট ‘নোটা’য় পড়ে বিজেপির বিপদ আরও বাড়েনি তো!
আজ সকালেও কাগজ জোড়া বিজ্ঞাপন দিয়েছে বিজেপি, ৯০ শতাংশ ভোট চাই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও আর্জেন্টিনা উড়ে যাওয়ার আগে রাজস্থানে দু’টি সভা করেছেন। কিন্তু বার্তা পাঠাতে চেয়েছেন মধ্যপ্রদেশেই। আবেদন করেছেন, বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সরিয়ে রেখে মানুষ যেন দেশ ও রাজ্যের স্বার্থেই ভোট দেন। কৃষক অসন্তোষ সামলাতে স্বামীনাথন রিপোর্ট দশ বছর আটকে রাখার দায় চাপিয়েছেন সনিয়া গাঁধীর উপরেই।
আরও পড়ুন: ‘মমতা চলবে, তবে কংগ্রেস নয়’
সকালে ভোট শুরু হতেই এ দিন বুথে বুথে ইভিএম বিভ্রাট দেখা দেয়। কংগ্রেসের তিন প্রধান মুখ নেমে পড়েন আসরে। কমলনাথ, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, দিগ্বিজয় সিংহ। দিগ্বিজয় বলেন, ‘‘কংগ্রেসের ভোট বেশি, বেছে বেছে এমন বুথেই ইভিএম খারাপ হচ্ছে।’’ সিন্ধিয়া কথা বলেন দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে। চিঠিও লেখেন। কমলনাথও সাংবাদিক বৈঠক করে ফেলেন। যার জেরে প্রায় তড়িঘড়ি এক হাজারের বেশি ইভিএম বদলাতে হয়েছে কমিশনকে। রাত পর্যন্ত ভোটারদের লাইন ছিল বুথে। তবু কংগ্রেসের দাবি, সময় বাড়ালেই হবে না। নতুন করে ভোট করতে হবে ওই কেন্দ্রগুলিতে।
আরও পড়ুন: মিজোরামে জয়ী কমিশনই
বিজেপি বলছে, কংগ্রেস যখনই হারের ইঙ্গিত পায়, তখনই ইভিএমকে দুষে রাজনীতি করে। আজ হায়দরাবাদে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে এক মঞ্চে চন্দ্রবাবু নায়ডু তেলঙ্গানার জন্য আগাম সতর্কবাণী শুনিয়ে দেন ইভিএমের কারচুপি নিয়ে। বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘সাংগঠনিক ভাবে আমরা কংগ্রেসের থেকে অনেক মজবুত। বুথ ধরে ধরে বিশ্লেষণ করেই বলতে পারব, এই রেকর্ড ভোটের অর্থ কী? মালওয়া আর মধ্য ভারত অঞ্চলে বিজেপি এবং আরএসএস কাজ করেছে। সেখানকার অঙ্ক হাতে নিয়েই বলা যাবে বাড়তি ভোটের রহস্য কী?’’ হেঁয়ালি কাটতে অপেক্ষা আরও দু’সপ্তাহের।