হরক সিংহ রাওয়ত। ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের পর এ বার উত্তরাখণ্ড। ফের ভাঙনের ছবি বিজেপি শাসিত আর এক রাজ্যের মন্ত্রিসভায়। দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ রবিবার রাতে উত্তরাখণ্ডের প্রভাবশালী বিজেপি মন্ত্রী হরক সিংহ রাওয়তকে বরখাস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিংহ ধামী। সোমবার হরক জানিয়েছেন, তিনি কংগ্রেসে যোগ দেবেন। পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, ‘‘উত্তরাখণ্ডের মানুষ বিজেপি-র অপশাসন থেকে মুক্তি চাইছেন। বিধানসভা ভোটে বিজেপি-র পরাজয় নিশ্চিত।’’ বিজেপি-র অন্দরে তাঁর ‘অপমানের’ কথা বলতে গিয়ে কেঁদেও ফেলেন হরক।
২০১৭ সালে উত্তরাখণ্ডের বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন ঠাকুর জনগোষ্ঠীর প্রভাবশালী নেতা হরক। বিজেপি মন্ত্রিসভায় ঠাঁইও পেয়েছিলেন তিনি। পদ্ম-শিবির সূত্রের খবর, কোটদ্বারের বিধায়ক হরক এ বার তাঁর স্ত্রীর জন্য পৌড়ী বিধানসভা আসনের জন্য টিকিট চেয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব তাতে সায় না দেওয়ায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রকাশ্যে দলবিরোধী মন্তব্য করছিলেন তিনি। সে কারণেই রবিবার রাতে তাঁকে দল এবং মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করা হয়। চলতি মাসেই উত্তরপ্রদেশে স্বামীপ্রসাদ মৌর্য, দারা সিংহ চৌহান, ধর্ম সিংহ সাইনির মতো মন্ত্রীরা বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। এ বার উত্তরখণ্ডেও দেখা গেল সেই প্রবণতা।
হরকের রাজনৈতিক যাত্রার সূচনা বিজেপি থেকেই। ১৯৯১ সালে অবিভক্ত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহের মন্ত্রিসভায় কনিষ্ঠতম মন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। ১৯৯৩ সালেও পৌড়ী আসনে জিতে ফের মন্ত্রী হন। ১৯৯৬ সালে বিজেপি ছেড়ে জনতা দলের টিকিটে পৌড়ী আসনে ভোটে লড়ে হেরে যান তিনি। এর পর যোগ দিয়েছিলেন কংগ্রেসে।
২০০২ সালে ল্যান্সডাউন বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে নারায়ণ দত্ত তিওয়ারি মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পান হরক। ২০০৭ সালে ফের কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে জিতে বিধানসভার বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব পান তিনি। বিধানসভা ভোটের আগে হরকের কংগ্রেসে যোগদান বিজেপি-কে বিপাকে ফেলতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের অনুমান। প্রসঙ্গত, মাস দু’য়েক আগেই উত্তরাখণ্ডের আর এক বিজেপি মন্ত্রী তথা দলিত নেতা যশপাল আর্য ইস্তফা দিয়ে রাহুল গাঁধীর উপস্থিতিতে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন।