কাঁসিরাম ও মায়াবতী।
বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-র প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত কাঁসিরামের ভিটে এখানেই। কিন্তু ইতিউতি ঝোলা গুটিকয়েক পতাকা ছাড়া পঞ্চাবের রোপার (রূপনগর) জেলার খওয়াসপুর গ্রামে ‘বিএসপি-র চিহ্ন’ মাত্র দু’টি। প্রথমটি কাঁসিরামের মূর্তি। দ্বিতীয়টি তার শ’পাঁচেক মিটার দূরত্বে তাঁর পৈত্রিক ভিটের উপরের নীল রঙের ‘হাতি’ আকৃতির জলের ট্যাঙ্ক।
স্থানীয় সূত্রের খবর, রামদসিয়া দলিত জনগোষ্ঠীর এই মহল্লায় একদা বিএসপি-র সংগঠন ছিল। কিন্তু চরণজিৎ সিংহ চন্নী পঞ্জাবের প্রথম দলিত মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে পরিস্থিতি আমূল বদলে গিয়েছে। পঞ্জাবের অন্যন্য বহু অঞ্চলের মতোই খওয়াসপুরের দলিতদের সমর্থন ঝুঁকেছে কংগ্রেসের দিকে। এমনকি, সেই তালিকায় রয়েছেন কাঁসিরামের ভাই হরবংশ সিংহও!
পৈত্রিক ভিটের দেওয়াল জুড়ে রয়েছে কাঁসিরামের নানা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ছবি। রয়েছেন, বিএসপি-তে তাঁর উত্তরসূরি মায়বতীও। কিন্তু বহেনজির কথা বলতে গেলেই ক্ষুব্ধ হন হরবংশ। বলেন, ‘‘উনি পঞ্জাবের কথা চিন্তাই করেন না। ওঁর যাবতীয় ভাবনা উত্তরপ্রদেশ নিয়ে।’’ পঞ্জাবে এ বারের ভোটে প্রকাশ সিংহ বাদলের শিরোমণি অকালি দলের সঙ্গে জোট করেছে বিএসপি। কিন্তু বাদলদের সরাসরি ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলেছেন কাঁসিরামের ভাই। তাঁর কথায়, ‘‘আমি চাই চন্নী ফের পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হোন।’’
১৮৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বিএসপি ১৯৮৯-এর লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে ৩টির পাশাপাশি পঞ্জাবেও একটি লোকসভা আসনে জিতেছিল। ১৯৯৬ সালের লোকসভা ভোটে পঞ্জাবে ৩টি আসনে জেতে তারা। কিন্তু তার পরে আর কাঁসিরামের রাজ্য থেকে দলের কোনও সাংসদ নির্বাচিত হননি। ১৯৯২ সালে পঞ্জাবের বিধানসভা ভোটে ১৬ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে ৯টি আসনে জিতেছিল ‘হাতি’। কিন্তু তার পরেই অধোগতি শুরু হয়। ২০১৭-র বিধানসভা ভোটে রাজ্যের ১১৭টি আসনের মধ্যে ১১১টিতে লড়ে দেড় শতাংশের সামান্য বেশি ভোট পেয়েছে বিএসপি।
এ বারও পঞ্জাবের দলিত ভোটব্যাঙ্ক বিএসপি-র থেতে ‘মুখ ফিরিয়ে’ থাকবে বলেই মনে করেন হরবংশ। কাঁসিরামের পরিবারের প্রতি মায়াবতী কখনও কোনও সম্মান দেখাননি বলে অভিযোগ তাঁর। হরবংশের মতে, পঞ্জাবের দলিতদের কাছে এখন একমাত্র নেতা চন্নী। রোপার জেলারই চমকৌর সাহিব কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়ছেন চন্নী। কংগ্রেস হাইকমান্ড তাঁকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণার ফলে দলিত সমর্থন কংগ্রেসের যাবে বলে মনে করেন খওয়াসপুরের বাসিন্দাদের অধিকাংশই।