পূর্ণ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কংগ্রেসের সাংগঠনিক আদব-কায়দা ঢেলে সাজছেন রাহুল গাঁধী। এই কাজে তাঁর সারথি ছিলেন অশোক গহলৌত। যাঁকে এ বার নতুন ইনিংস খেলতে ফেরানো হচ্ছে জয়পুরে। সাংগঠনিক স্তরে প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে এআইসিসি-র যোগসূত্র এখন থেকে কে হবেন, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে।
বুথ স্তর পর্যন্ত ‘লোকসম্পর্ক অভিযান’, নিচু তলার কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি কংগ্রেস সভাপতির যোগাযোগ তৈরির জন্য ‘শক্তি’ প্রকল্প, রাহুলের সঙ্গে প্রদেশ ও জেলা নেতাদের ভিডিয়ো কনফারেন্সিং-এর ব্যবস্থা, লোকসভা ভোটের ইস্তাহার খসড়া করার আগে জনমত নেওয়ার পরিকল্পনা— সাম্প্রতিক কালে প্রদেশ কংগ্রেসের কাছে দিল্লির যাবতীয় নির্দেশই পাঠিয়েছেন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) গহলৌত। সাংগঠনিক যে কোনও বিষয়ে তাঁর সঙ্গেই এখন যোগাযোগ রাখতে হয় বিধান ভবনকে। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, ওই প্রকল্পগুলি সবই চালু থাকবে। তবে তার পরিচানার ভার অন্য কারও হাতে দেওয়া হবে।
ইদানীং কালের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের সূত্রেই গহলৌত জয়পুরের অ্যালবার্ট হলে আজ, সোমবার রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বাংলার কংগ্রেস নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। রাহুল এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহেরও সেখানে অতিথি হিসেবে থাকার কথা। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান-সহ রাজ্যের বেশ কিছু কংগ্রেস নেতা জয়পুর যাচ্ছেন। যদিও কমল নাথের সঙ্গে বাংলার কংগ্রেসের সম্পর্ক অনেক পুরনো ও গভীর হওয়া সত্ত্বেও মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁর শপথে কারও যাওয়ার কথা নেই। আবার গৌরব গগৈয়ের আগে বাংলার কংগ্রেসের যিনি পর্যবেক্ষক ছিলেন, সেই সি পি জোশী ফের বিধায়ক হয়েছেন নাথদোয়ারা আসন থেকে। তাঁর প্রচারেও অমিতাভ চক্রবর্তী, সন্তোষ পাঠকেরা গিয়েছিলেন। আর এক বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেত্রী গিরিজা ব্যসকে উদয়পুর শহর থেকে অনেক দিন পরে বিধানসভা ভোটে দাঁড় করানো হলেও তিনি অবশ্য জিততে পারেননি।
গহলৌত বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস সভাপতি যা দায়িত্ব দিয়েছেন, পালন করেছি। এর পরে কী হবে, তিনিই ঠিক করবেন।’’ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে নরেন্দ্র মোদীর সরকার রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ের নতুন সরকারকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিক, এই দাবিও তুলেছেন তিনি। কংগ্রেসের অন্দরে জল্পনা, জোশীকে ফের এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক পদে ফেরানো হতে পারে। তিনিও আপাতত রাহুলের মুখাপেক্ষী।
এরই মধ্যে মধ্যপ্রদেশের দায়িত্ব সেরে আগামী সপ্তাহে কলকাতায় আসার কথা এআইসিসি-র কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর। হাতে গোনা কিছু নেতা টিভি চ্যানেলে গিয়ে নিজেদের মতো বলেন, এই ব্যবস্থা উঠে যাচ্ছে। এ বার থেকে দলই ঠিক করে দেবে কে কোথায় কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্ব করতে যাবেন। সেই ব্যবস্থারই খুঁটিনাটি ঠিক করবেন প্রিয়ঙ্কা।