প্রতীকী ছবি।
একে তো এমন বাঙালি জঙ্গি সংগঠনের নাম রাজ্যের মানুষ শোনেননি। তার উপরে সংগঠনের সদস্যসংখ্যা তিন শতাধিক!
আশপাশের গ্রামবাসীদের দাবি, জঙ্গি হিসেবে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অস্ত্র জমা দেওয়া বাঙালি জনমুক্তি বাহিনী বা এনএলএফবি জঙ্গিদের মধ্যে অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন ওদালগুড়ি জেলার পরিচিত মুখ। কেউ দোকানদার, কেউ দর্জি, কেউ মিস্ত্রী। রাতারাতি তারা জংলা পোশাক, হাতে রাইফেল নিয়ে জঙ্গি হিসেবে মঞ্চে ওঠায় হতবাক ওদালগুড়ি, বাক্সার বাসিন্দারা। অবশ্য সংগঠনের সভাপতি অমরজ্যোতি পালের দাবি, ‘‘জঙ্গিরা মোটেই পরিবার বা গ্রামবাসীদের জানিয়ে লড়াই করে না।’’
ওদালগুড়ির প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের পরিবার ও পড়শিরা জানান, গত ১০-১২ বছর ধরে তিনি এখানেই রয়েছেন। ছোটখাটো ব্যবসা করেন। অন্য কয়েকজন ‘জঙ্গি’ তাঁদের সংগঠন কবে তৈরি হয়েছে, কি উদ্দেশ্য, যুদ্ধবিরতির শর্ত নিয়ে কিছুই বলতে পারেননি। আত্মসমর্পণ করা বিশ্বজিৎ সূত্রধর পেশায় মিস্ত্রী। মনোজ মল্লিক বহু বছর ধরে বাজারে ফল বিক্রি করেন। আসুর বক্তব্য, রাজনৈতিক উদ্দেশে ভুয়ো আত্মসমর্পণের নাটক সাজিয়ে অন্যায় করেছে পুলিশ-প্রশাসন। এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে ডিজিপি ভাস্করজ্যোতি মহন্ত কোনও মন্তব্য করেননি।
আরও পড়ুন: বড়ো জঙ্গিদের সঙ্গে আলোচনা ঘিরে অসন্তোষ
এ দিকে অমরবাবু আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, ২০১৪ সাল থেকে তাঁরা শান্তি আলোচনা চালাচ্ছেন। সরকারের দক্ষতা বিকাশ প্রশিক্ষণ নিয়ে কেউ ব্যবসা করলে, মিস্ত্রীর কাজ করলে দোষের কিছু নেই। বিশ্বজিৎ সূত্রধর, বাপন সরকার, মনোজ মল্লিকদের সকলকে স্পেশ্যাল ডিজিপি ২০১৮ সালে পরিচয়পত্র দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, সংগঠনের বিভিন্ন শ্রেণি বিভাজন থাকে। সকলেই সশস্ত্র সংগ্রামে যুক্ত থাকেন না। রাজনৈতিক শাখার সদস্যরা সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশে থাকে। পরিবার বা পড়শিদেরও সব খুলে বলা যায় না। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বাঙালিদের আন্দোলনকে খাটো করা ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চলছে।’’