ছবি: সংগৃহীত।
কোনও অবৈধ ভোটার বা বহিরাগত ভোট দিতে পারবেন না ২০২১ সালের নির্বাচনে। এনআরসি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে এমনটাই দাবি ছিল শাসকদের। এমনই আশা করেছিলেন অসমের মানুষও। কিন্তু নির্বাচন কমিশন জানাল, এনআরসিতে নাম না-থাকা ১৯ লক্ষাধিকের মধ্যে যাঁদের নাম ডি-ভোটারের তালিকায় নেই, যাঁরা ঘোষিত বিদেশি নন, কিংবা যাঁদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত কোনও মামলা ফরেনার্স ট্রাইবুনাল বা অন্য কোনও আদালতে বিচারাধীন নয়— তাঁরা সকলেই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।
রাজ্যের যুগ্ম মুখ্য নির্বাচনী অফিসার লক্ষ্মীনন্দন শহরিয়া জানান, এ নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, এনআরসির প্রক্রিয়ার সঙ্গে আপাতত ভোটার তালিকার কোনও সম্পর্ক নেই। তাই ফরেনার্স ট্রাইবুনাল বা অন্য আদালতে বিদেশি ঘোষিত ব্যক্তি, নাগরিকত্ব মামলায় বিচারাধীন ডি-ভোটার বাদে বাকিদের ভোটদানের ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই।
এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরে দেড় বছর কেটে গেলেও রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার তরফেও গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে এনআরসিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। গৌহাটি হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে খোদ এনআরসি দফতর জানিয়েছে, অসমের প্রকৃত অধিবাসীদের পদবি না-হওয়া সত্ত্বেও ‘অরিজিনাল ইনহ্যাবিট্যান্ট’ হিসেবে লক্ষাধিক নাম এনআরসিতে ঢুকেছে। সন্দেহভাজন প্রায় ১০,১৯৯ জন ব্যক্তির তথ্য ফের যাচাই করে দেখা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্তত ৪৭৯৫ জন ঘোষিত বিদেশি বা ডি-ভোটার! আবার এমন ৫৪০৪ জনের নাম মিলেছে, যাঁদের তালিকায় থাকার কথা ছিল, কিন্তু ভুলবশত বাদ পড়েছে। এই বিপুল অসঙ্গতির কথা আরজিআইকে জানানো হয়েছে। দাবি উঠেছে, গোটা এনআরসি প্রক্রিয়া নতুন করে হোক।
তথ্য যাচাই ও অন্যান্য জটিলতার পাশাপাশি এনআরসির সফটওয়্যারে সমস্যার জেরে ১৯ লক্ষাধিক মানুষের নাম বাদ পড়ার কারণ জানিয়ে রিজেকশন লেটার দেওয়ার কাজ থমকে। এই পরিস্থিতিতে নাম বাদ পড়া ব্যক্তিরা ভোট দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। এনআরসি তালিকায় বাদ পড়া ব্যক্তিরা রিজেকশন লেটার না পাওয়া পর্যন্ত ফরেনার্স ট্রাইবুনালে যেতে পারছেন না। যুগ্ম মুখ্য নির্বাচনী অফিসার শহরিয়া জানান, যত ক্ষণ ফরেনার্স ট্রাইবুনালে বিচার শুরু না হচ্ছে, ভোটদানে সমস্যা নেই।