ফাইল চিত্র।
এনআরসি দফতরের ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল আসাম পাবলিক ওয়ার্কস (এপিডব্লিউ)। এনআরসি নিয়ে মূল মামলাটি করেছিল এরাই। সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে হলফনামা জমা দিয়েছে এপিডব্লিউ। তাতে গুরুতর বেশ কিছু অভিযোগ আনা হয়েছে ও সেগুলির সপক্ষে প্রমাণও পেশ করা হয়েছে হলফনামা সঙ্গে। অভিযোগের তালিকাটি এই রকম: এক, এনআইএ এবং পুলিশের হাতে ধরা পড়া জেহাদিদের নামও রয়েছে এনআরসির তালিকায়। দুই, এনআরসির কাজে উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের কাজের কোনও হদিস নেই। তিন, এনআরসির কাজ করা শিক্ষকদের কোনও অতিরিক্ত ভাতা দেওয়া হয়নি, কিন্তু খাতায়-কলমে তাঁদের টাকা দেওয়ার কথা দেখানো হয়েছে। চার, এনআরসির প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে চলেছে ব্যাপক অনিয়ম। এই কারণে গোটা এনআরসি প্রক্রিয়া নিয়ে সিবিআই বা এনআইএকে দিয়ে তদন্ত দাবি করানোর দাবি জানিয়েছে এপিডব্লিউ। সেই সঙ্গে এনআরসির তালিকা ১০০ শতাংশ পুনর্মূল্যায়নের দাবি তুলেছে তারা।
দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে করে এপিডব্লিউ-র সভাপতি অভিজিৎ শর্মা আজ জানান, এনআরসি তালিকায় যে বহু সন্দেহভাজন বাংলাদেশির নাম ঢুকেছে— তা তাঁরা প্রথম থেকে দাবি করছেন। আজহারউদ্দিন, রঞ্জিৎ আলি, লুইত জামিউল জামাল, মুকাদ্দির ইসলামের মতো জেহাদিদের নাম তালিকায় বর্তমান। অভিজিতের দাবি, ১০০ শতাংশ এনআরসি তথ্য ফের যাচাই না করা পর্যন্ত এবং এনআরসি সংক্রান্ত মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত যেন এনআরসির তালিকা প্রামাণ্য হিসেবে স্বীকৃতি না-পায়।
প্রাক্তন কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হলফনামায় নিজেই স্বীকার করেছেন, উইপ্রোর সফটওয়্যার ‘লিগ্যাসি ডেটা’র অপব্যবহার চিহ্নিত করতে অক্ষম। সেই কথা তুলে ধরে এপিডব্লিউ অভিযোগ করেছে, এই ভাবেই লক্ষ লক্ষ
সন্দেহজনক মানুষ এনআরসিতে নাম তুলেছে। আর হাজেলার সৌজন্যে উইপ্রো সুদহীন আগাম অর্থ পেয়েছে। ফলে রাজ্য সরকারের সাড়ে ৯ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। ৩৭০০টি জেনারেটর ভাড়ায় নিয়ে সেগুলি কেনা বাবদ মিথ্যে ৪.৭৬ কোটি টাকার বিল জমা দেওয়া হয়েছে। কোনও কাজ ছাড়াই গাড়ি ও মোটা মাইনে দিয়ে উপদেষ্টা পদে অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের কাজে রাখা হয়েছিল। মাত্র সাড়ে ২২ হাজার টাকার ল্যাপটপের দাম ৪৪ হাজার দেখানো হয়েছে। এমন সব তথ্য-সহ এনআরসি দফতরের কাজ, প্রযুক্তির অপব্যবহার, বিভিন্ন সামগ্রী কেনায় দুর্নীতি, মিথ্যা হিসেব দাখিল করা, বিনা কাজে সরকারি খরচে নিয়োগের মতো বিভিন্ন বিষয়ে হাজেলাকে দায়ী করে হাজেলা, উইপ্রো ও শেল নামে এক মধ্যসত্ত্বভোগীর বিরুদ্ধে এনআইএ বা সিবিআই তদন্ত দাবি করেছে এপিডব্লিউ।