এনআরসি নিয়ে মমতার তোপ, পাল্টা জবাব অমিত শাহের।
অসমের নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ঘিরে দিল্লির বুকে বাংলার লড়াই। এক দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্য দিকে অমিত শাহ।
পশ্চিমবঙ্গের জন্য নাগরিক পঞ্জি তৈরির দাবি গত কালই তুলেছিলেন রাজ্য বিজেপির দিলীপ ঘোষেরা। আজ রাজধানীতে সেই দাবি তুললেন বাবুল সুপ্রিয়, গিরিরাজ সিংহ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের মতো নেতারা। সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেননি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। আজ তিনি বলেন, ‘‘এখন অসমের নাগরিক পঞ্জি তৈরির কাজ চলছে। ওই প্রক্রিয়া শেষ হলে অন্যান্য রাজ্যের কথা ভাবা হবে।’’ অন্য দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘কে থাকবে, আর কে থাকবে না, তা শাসক দল ঠিক করে দিতে পারে না। বিজেপিকে ওই কথা বলার সাহস কে দিল?’’
আজ সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গেও দেখা করেন মমতা। রাজনাথ তাঁকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, যাঁদের নাম নেই, তাঁরা ফের আবেদনের সুযোগ পাবেন। তাঁদের সঙ্গে কোনও অমানবিক আচরণ করা হবে না। পরে মমতা বলেন, ‘‘যাঁদের নাম নেই, তাঁরা কী ভাবে রেশন, শিক্ষা, চাকরির সুবিধা পাবেন, তা নিয়ে রাজনাথকে আমাদের উদ্বেগ জানিয়েছি। বলেছি, মানুষের স্বার্থে সংশোধনী আনা হোক সংসদে।’’
আরও পড়ুন: ‘যাদের নাম তালিকায় নেই, তারা অনুপ্রবেশকারী’
গত কাল অসমে নাগরিক পঞ্জির খসড়া তালিকা প্রকাশ হতেই সরকার-বিরোধী আন্দোলনের রাশ হাতে তুলে নেয় তৃণমূল। স্থির হয়, জাতীয় স্তরে প্রতিবাদ করা হবে। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামেন অমিত। রাজ্যসভায় তিনি বলেন, ‘‘অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্নে তৃণমূল অবস্থান স্পষ্ট করুক। কাকে বাঁচাতে চাইছে তৃণমূল?’’
মমতার জবাব, ‘‘কে কোথায় থাকবে, অমিত শাহ ঠিক করবেন না।’’ পরে কনস্টিটিউশন ক্লাবের অনুষ্ঠানে তাঁর দাবি, ‘‘দেশে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিহার যদি বলে বাঙালিদের, দক্ষিণের রাজ্যগুলি যদি বলে উত্তর ভারতের মানুষকে থাকতে দেব না, তা হলে দেশের ভবিষ্যৎ কী হবে?’’ অমিত পাল্টা বলেন, ‘‘কিসের গৃহযুদ্ধ! এক বার ভয় দেখিয়ে দেশ ভাগ হয়েছে। এ বারেও পরিকল্পিত ভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এক রাজ্যের মানুষ অন্য রাজ্যে থাকতে পারেন। অসমেও তা-ই হয়েছে। কেউ তথ্যপ্রমাণ দিতে না পারলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের কাছ থেকে প্রমাণ চাওয়া হয়েছে।’’