তৃতীয় বার নাগরিকত্ব প্রমাণের নোটিস পেয়ে মণ্ডল পরিবার। ছবি: সংগৃহীত।
তাঁরা যে ভারতীয় নাগরিক, তার প্রমাণ দিয়েছেন দু’বার। এ বার তৃতীয় বার নাগরিকত্ব প্রমাণের ডাক পেলেন অসমের বালিজান কাছারি গ্রামের বাসিন্দা কাশীনাথ মণ্ডল। ৬৮ বছর বয়সি কাশীনাথ ছাড়াও তাঁর ৪০ বছরের ছেলে গোবিন্দকেও নোটিস পাঠিয়েছে প্রশাসন। ঘটনায় যতটা না ভীত তার চেয়েও বেশি বিস্মিত এই শ্রমিক পরিবার।
গত ৮ জুন সোনিতপুর ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের নোটিস পেয়েছেন নটসুন্দরী মণ্ডল। তিনি কাশীনাথের স্ত্রী। নোটিসে বলা হয়েছে, ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চের মধ্যে অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন তাঁরা। তাই এখন তাঁদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। এই নোটিস প্রসঙ্গে কাশীনাথের ছোট ছেলে নকুল বলেন, ‘‘এর আগে ২০১৮ সালে আমার দিদির শ্বশুরবাড়িতে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। তার পর দিদিকে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হয়। সব কাগজপত্র দেখে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে ভারতীয় বলে ঘোষণা করে। কিন্তু ওই বছরই আমার বাবাকে নোটিস পাঠানো হয়। আমাদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে বলা হয়। আদালতে দাঁড়িয়ে আমার বাবা বলেছিলেন যে, নিজের জন্মভূমিতে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে দিতে তিনি ক্লান্ত।’’
এ বার তৃতীয় বার নোটিসের প্রেক্ষিতে নকুলের মন্তব্য, ‘‘এর আগে আইনজীবীর সাম্মানিক জোগাড় করতে গিয়ে ছ’টা গরু বিক্রি করেছি আমরা। নিজেদের ভারতীয় প্রমাণ করার জন্য দেড় লক্ষ টাকা খরচ করে ফেলেছি। এ বার মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার কাছে বিচার চেয়ে আবেদন করছি।’’
কাশীনাথের পরিবারের মতো একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন ওই গ্রামেরই বাসিন্দা অনিল মণ্ডল। অনিলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা মানসিক এঅবং শারীরিক নির্যাতন ছাড়া আর কিছুই নয়। কারা এই মামলা দায়ের করছে, সেটাও আমরা জানি না।’’
উল্লেখ্য, গত ৬ মে গৌহাটি হাই কোর্ট জানায় এক বার কোনও ব্যক্তির নাগরিকত্ব প্রমাণ হলে তাঁকে আর দ্বিতীয় বার ডাকা যাবে না। কিন্তু অসম জুড়ে এমন একশোর বেশি মামলা দেখা যাচ্ছে, যেখানে নাগরিকত্ব প্রমাণ দিতে একাধিক বার নোটিস পাঠিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ