ল্যান্স নায়েক যজ্ঞপ্রতাপ সিংহ। ছবি ইউটিউবের সৌজন্যে।
বিএসএফ কনস্টেবল তেজবাহাদুর যাদব আর সিআরপিএফ জওয়ান জিৎ সিংহের অভিযোগের ভিডিও নিয়ে এখনও সোরগোল চলছে। দু’জনেই আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ান। এ বার দেশের সামরিক বাহিনীর ভিতর থেকেও বেরিয়ে এল একই রকম ভিডিও। একের পর এক ভিডিও-র ধাক্কায় শুক্রবার যখন সাংবাদিক সম্মেলন করছিলেন সেনাপ্রধান, তার কিছু ক্ষণ আগেই পোস্ট করা ওই ভিডিওয় নতুন করে তোলপাড় হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। এবারের তিরটা এল দেহরাদূনের ৪২ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডের ল্যান্স নায়েক যজ্ঞপ্রতাপ সিংহের কাছ থেকে। কর্তাদের জুতো পালিশ থেকে কাপড় কাচার মতো ব্যক্তিগত বা পারিবারিক কাজ তাঁদের দিয়ে দিনের পর দিন করানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
ইউটিউবে পোস্ট করা ওই ভিডিওয় যজ্ঞপ্রতাপ সিংহের অভিযোগ, তিনি সেনাকর্তাদের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের শিকার। ভিডিও-তে তাঁকে বলতে দেখা যায়, ‘‘রোজ সকালে উঠে মেমসাহেবের কুকুরদের ঘুরতে নিয়ে যেতে হয়। সাহেব, মেমসাহেবদের জুতো পালিশ করতে হয়, তাঁদের জামা-কাপড় নোংরা হয়ে গেলে আমাদের দিয়ে কাচানো হয়। সেনাকর্তারা এই ভাবেই অধস্তনদের হেনস্থা করেন। সাড়ে পনেরো বছর ধরে সেনাবাহিনীতে এই প্রথাই চলতে দেখছি। প্রতিবাদ করেছি। কোনও লাভ হয়নি। উল্টে তাঁদের থেকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর হুমকি পেয়েছি।’’ গত জুনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে এ হেন নির্যাতনের কথাও জানান যজ্ঞপ্রতাপ। তারপর নাকি প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জবাবদিহি চেয়ে উপরতলার কাছে একটি চিঠিও আসে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে দ্রুত রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতে হিতে বিপরীত হয়। অত্যাচারের মাত্রা দ্বিগুণ হয়ে যায়। এতটাই অত্যাচার করা হত যে অন্য কেউ হলে নাকি আত্মহত্যা করতেন। বলেছেন এই জওয়ান। কিন্তু শুধুমাত্র উর্দির মান রাখতে তেমন কোনও পদক্ষেপ তিনি করেননি। ভিডিও-র শেষে যজ্ঞপ্রতাপ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে জানতে চান, তাঁর দোষ কী? তাঁর কোর্টমার্শালের ব্যবস্থা করা হচ্ছে কেন?
দেখুন ভিডিও:
শুরুটা করেছিলেন তেজবাহাদুর। তারপর একটার পর একটা ভি়ডিও স্ট্রাইকে একপ্রকার বাধ্য হয়েই গতকাল মুখ খোলেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভাবে অভিযোগ না করে সেনা দফতরে রাখা গ্রিভ্যান্স বক্সে ফেলার কথা বলেন তিনি। প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন অফিসারদের সঙ্গেও সরাসরি যোগাযোগ করার পরামর্শও দেন। আর যজ্ঞপ্রতাপের অভিযোগ শুনে বলেন, ‘‘যে সেনা জওয়ান ভিডিও পোস্ট করেছেন, তাঁর সহায়কের কাজে আপত্তি রয়েছে। এই ধরনের কাজে কাউকে জোর করা ঠিক নয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’’
আরও পড়ুন: ভাইব্র্যান্ট গুজরাতে ৫ কোটির মউ সই করল ক্লাস টেনের ছাত্র, বানাবে ড্রোন