অশোক মোচী ২০০২ এবং অশোক মোচী ২০২০...
২০০২-এর গুজরাত দাঙ্গার সময় তাঁর একটি ছবি ‘সাড়া’ ফেলে দিয়েছিল। এক গাল দাড়ি, ডান হাতে রড, বাঁ হাত মুষ্ঠিবদ্ধ— দুটোই আকাশের দিকে ছোড়া, কপালে গেরুয়া ফেট্টি। তিনি অশোক মোচী।
সেই অশোককেই এ বার দেখা গেল কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া কৃষি আইন নিয়ে আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে। নিজের শহর আমদাবাদ থেকে প্রায় হাজার কিলোমিটার দূরের রাজস্থান-হরিয়ানা সীমানায়। ২০২০-র এই ছবিও ‘সাড়া’ ফেলেছে। সেখানে অশোকের ডান হাতে চায়ের কাগজ-কাপ, বাঁ হাতে কৃষক সংগঠনের পতাকা।
তাঁর যে ‘ভয়ঙ্কর’ ছবি সামনে এসেছিল, সেটি প্রাণে বাঁচতে তুলতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে পরে দাবি করেছিলেন অশোক। জানিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবারের কোনও যোগাযোগও ছিল না। তাৎপর্যপূর্ণ হল, দাঙ্গার সময় তাঁর সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল যে দলের নাম, এখন তাঁদের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বসেছেন অশোক।
কৃষকসভার যুগ্ম সম্পাদক বিজু কৃষ্ণন এবং এসএফআই-এর যুগ্ম সম্পাদক দীপ্সিতা ধরের সঙ্গে অশোক মোচী (বাঁ দিকে)।—নিজস্ব চিত্র।
বিতর্কিত কৃষি আইনের প্রতিবাদ-আন্দোলনে গুজরাত থেকে কৃষক সংগঠনের প্রচুর মানুষ এসেছেন। রাজস্থান-হরিয়ানা সীমানার শাহজাহানপুরে অবস্থানে বসেছেন তাঁদের একটা বড় অংশ। সেই দলেই রয়েছেন আমদাবাদের শাহপুরের বাসিন্দা অশোক। কৃষকদের এই আন্দোলনে তিনি সংহতি জানাতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন অখিল ভারতীয় ক্ষেত মজদুর সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিক্রম সিংহ। বৃহস্পতিবার শাহজাহানপুরের আন্দোলনস্থল থেকে ফোনে আনন্দবাজার ডিজিটালকে তিনি বলেন, ‘‘গুজরাতের কৃষক সংগঠনের সঙ্গে অশোক এসেছেন এখানে। আমাদের আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ও বটে।’’
আরও পড়ুন: পুর-পদ ছাড়তেই পার্টি অফিসে হামলা, তাই দলও ছাড়লেন জিতেন্দ্র
আরও পড়ুন: ‘মাথা ঝোঁকাবে না বাংলা’, আইপিএস অফিসার বদলি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী
অশোকের আসল পদবি পারমার। পেশা জুতো সেলাই করা। সে কারণেই ‘মোচী’ শব্দটি জুড়ে গিয়েছে অশোকের নামের সঙ্গে। গুজরাত দাঙ্গার সময় অশোকের ওই ‘ভয়াল’ ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। এ বার কৃষক আন্দোলনে তাঁর জুড়ে যাওয়ার ছবিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ভাইরাল’। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম তেমনই একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ওঁর নাম অশোক পারমার (ওরফে অশোক মোচী)। ২০০২ গুজরাত গণহত্যার কুখ্যাত মুখ। আজ আমদাবাদ থেকে হাজার কিলোমিটার দূরে এসে রাজস্থান-হরিয়ানা সীমানায় বসে আছেন। আন্দোলনরত কৃষকদের সংহতি জানাতে এসেছেন। হাতে কৃষকসভার লাল পতাকা’।