রাজভবন থেকে বেরিয়ে আসছেন অশোক গহলৌত এবং তাঁর অনুগামীরা। ছবি- পিটিআই
সচিন পাইলট পর্বে আপাতত ছেদ পড়লেও ফের নাটকীয় মোড় নিয়েছে রাজস্থানের রাজনীতি। সোমবার বিধানসভার অধিবেশন ডেকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে প্রস্তুত অশোক গহলৌতের সরকার। কিন্তু দিনক্ষণ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন মরুরাজ্যের রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র। কী কারণে বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হবে? এমনই সব প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এ নিয়ে শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা চালান মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। তাতে স্থির হয়েছে, করোনা পরিস্থিতি এবং রাজ্যের অর্থনীতির উপর আলোচনা হবে অধিবেশনে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাশ হয়ে যাওয়া সেই প্রস্তাব আজ রাজ্যপালকে জানিয়েও দেওয়া হবে।
শুক্রবার থেকে ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে রাজস্থানের রাজনীতি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য বিধানসভার অধিবেশন ডাকার দাবিতে, ওই দিন রাজভবনে ৫ ঘণ্টা ধরে ধরনা চালায় গহলৌত শিবির। এর পর গহলৌতের অনুগামী বিধায়কেরা জানান, রাজ্যপাল বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু তার আগে মন্ত্রিসভাকে কিছু বিষয় স্পষ্ট করতে বলেছেন। তা নিয়ে আলোচনা করতে রাতেই মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠকে বসে মন্ত্রিসভা। দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টার বৈঠকে স্থির হয়, রাজ্যের করোনা এবং আর্থিক পরিস্থিতি — এই দুই ইস্যুকে সামনে রেখেই বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হবে। রাজ্যপালের তোলা বিষয়গুলি নিয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে গহলৌত শিবির। এ দিন মন্ত্রি পরিষদেরও বৈঠক ডেকেছেন অশোক।
রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর এই দড়ি টানাটানি শুক্রবার দিনভর অব্যাহত ছিল। গহলৌতের মন্ত্রিসভার বৈঠক যখন বসেছে তখন রাজভবন সূত্রে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার চিঠি দিয়ে সোমবার বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। এত সংক্ষিপ্ত সময়ের নোটিসে অধিবেশন ডাকার কোনও যুক্তি নেই। সাধারণত ২১ দিন সময় দিতে হয়। পাল্টা গহলৌত অভিযোগ তোলেন, ‘উপরমহলের চাপ’-এর মুখেই বিধানসভার অধিবেশন ডাকছেন না রাজ্যপাল। কিন্তু তিনি তাঁর সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে তৈরি।
আরও পড়ুন: রাজ্যপাল বনাম গহলৌত, দ্বন্দ্বে ঝুলে রাজস্থান
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রাজস্থানের রাজনৈতিক চিত্রটা। ২০০ আসনের বিধানসভায় অশোক গহলৌতের ঝুলিতে রয়েছে ১০৩ বিধায়ক (কংগ্রেস ৮৮, বিটিপি ২, সিপিএম ২, আরএলডি ১ এবং নির্দল ১০)-এর সমর্থন। সেই সঙ্গে সচিন পাইলটের শিবির থেকে ৩ জন ফিরে আসবেন বলে গহলৌত শিবির আশা করছে। অন্য দিকে সচিনের শিবির তাঁদের কাছে ৩০ জন বিধায়ক রয়েছে বলে দাবি করলেও বাস্তবে মাত্র ১৯ জন রয়েছেন। বিজেপির নিজের বিধায়ক সংখ্যা ৭২। সঙ্গে ৩ জন লোকতান্ত্রিক পার্টির বিধায়ক।
আরও পড়ুন: শুনশান রাস্তা, পুলিশের কড়াকড়িতে বন্ধের চেহারা কলকাতা থেকে জেলায়