Rajasthan Crisis

সঙ্গী অনেক প্রশ্ন, দিল্লিতে সনিয়ার কাছে গহলৌত

শুক্রবার কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে মনোনয়ন জমার শেষ দিন। তার ৪৮ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত কংগ্রেসের কেউ জানেন না, দলের সভাপতি নির্বাচনে গান্ধী পরিবারের বাছাই করা প্রার্থী কে হবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১৯
Share:

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। ছবি: পিটিআই

তিনি কি সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে দুঃখপ্রকাশ করবেন? তিনি কি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর গদি ছাড়তে রাজি হবেন? তিনি কি কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের দৌড় থেকে ছিটকেই গিয়েছেন, না কি ফের তাঁর প্রত্যাবর্তন হতে পারে?

Advertisement

এত সব প্রশ্নচিহ্ন নিয়েই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত বুধবার রাতে দিল্লি পৌঁছলেন। মধ্যপ্রদেশের পোড়খাওয়া নেতা দিগ্বিজয় সিংহ জানিয়েছেন, তিনি সভাপতি নির্বাচনে লড়তে পারেন। দিগ্বিজয় অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে গান্ধী পরিবারের এখনও কোনও কথা হয়নি। তিনি নিজের মতো করেই উদ্যোগী হয়েছেন।

শুক্রবার কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে মনোনয়ন জমার শেষ দিন। তার ৪৮ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত কংগ্রেসের কেউ জানেন না, দলের সভাপতি নির্বাচনে গান্ধী পরিবারের বাছাই করা প্রার্থী কে হবেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকালে সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন গহলৌত। সেই বৈঠকের পরে স্পষ্ট হবে, গহলৌত কি আর নির্বাচনে নামবেন? তিনি না নামলে, দিগ্বিজয় সিংহ গান্ধী পরিবারের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। দিগ্বিজয় বুধবার রাতে কেরলে ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা থেকে দিল্লি পৌঁছেছেন। অতীতে দিল্লির বাটলা হাউস পুলিশি সংঘর্ষ বা মুম্বইয়ের ২৬/১১-র হামলার পরে পুলিশি অভিযান নিয়ে দিগ্বিজয়ের বিতর্কিত মন্তব্য তাঁর বিরুদ্ধে যাবে বলে কংগ্রেস নেতাদের মত। তই অধিকাংশ নেতা মনে করছেন, শেষ বেলায় মুকুল ওয়াসনিক গান্ধী পরিবারের নির্দেশে সভাপতি নির্বাচনে নামবেন।

Advertisement

গহলৌতের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বুধবার সনিয়া কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা এ কে অ্যান্টনির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আর আগেই দিল্লিতে এসে ঘাঁটি গেড়ে ফেলা সচিন পাইলটের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, রাজীব শুক্লর বাড়িতে গোপনে সেই বৈঠক হয়েছে। প্রিয়ঙ্কা চাইছেন, গহলৌতকে সরিয়ে পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী করা হোক।

এ কে অ্যান্টনি কংগ্রেসের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান। তাঁকে কেরল থেকে ডেকে আনা হয়েছিল। গত রবিবার জয়পুরে কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের বৈঠকে যোগ না দিয়ে অশোক গহলৌতের অনুগামী বিধায়করা যে ভাবে আলাদা বৈঠক করেছেন, তাতে সনিয়া প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। একে শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তিন জন নেতাকে শো-কজ করা হয়েছে। অশোক গহলৌতের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে অ্যান্টনির মতামত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, গহলৌত বরাবরই গান্ধী পরিবারের অনুগামী। তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতায় কোনও খামতি নেই। সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পরে তিনি ফের সভাপতি পদের দৌড়ে ফিরে আসতে পারেন। হরিয়ানার কংগ্রেস নেতা ভূপিন্দর সিংহ হুডা আজ গহলৌতের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রবীণ নেতারা মনে করছেন, সভাপতি না হলেও সনিয়ার সঙ্গে গহলৌতের ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নেওয়া উচিত। তাতে দলের মঙ্গল। গহলৌত সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে কথা বলে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কারণ বুধবার সকালে তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। গহলৌতের দফতর থেকে অবশ্য জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন না গহলৌত।

এ সবের মাঝে অসমের কংগ্রেস সাংসদ আবদুল খালেক আজ দাবি তুলেছেন, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে কংগ্রেস সভানেত্রী করা হোক। তাঁর যুক্তি, রাহুল গান্ধী বলেছেন, গান্ধী পরিবারের কেউ কংগ্রেস সভাপতি হবেন না। কিন্তু প্রিয়ঙ্কা তো বিয়ের পরে এখন আর গান্ধী পরিবারের সদস্য নন। তিনি বঢরা পরিবারের সদস্য। তাই তাঁর কোনও বাধা নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement