মাঠে ফেরার জন্য কী ভাবে ওজন কমিয়েছিলেন খাদ্যরসিক পন্থ? ছবি: সংগৃহীত।
গাড়ি দুর্ঘটনা ঋষভ পন্থের ক্রিকেটজীবনের ১৫ মাস কেড়ে নিয়েছিল। সেই দুর্ঘটনার রেশ কাটিয়ে বাইশ গজে প্রত্যাবর্তনের পথ মোটেই সহজ ছিল না পন্থের জন্য। তবে মনের জোরে ও কঠোর পরিশ্রম করে ২০২৪-এর আইপিএলের পর ভারতীয় দলের জার্সিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়, টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন হয়ে গিয়েছে পন্থের। ২০২৫-এর আইপিএলের নিলামে সেই পন্থকেই ২৭ কোটি টাকায় নিজেদের দলের সদস্য করল লখনউ সুপার জায়ান্টস। এখনও পর্যন্ত আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার হলেন পন্থ।
দুর্ঘটনার পরে হুইলচেয়ার, ক্রাচের সঙ্গ ছেড়ে মাঠে ফেরার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন পন্থ। মনে করা হয়েছিল, তাঁর মাঠে ফিরতে অন্তত ১৮ মাস সময় লাগবে। তবে একাগ্রতা, অনুশীলন, কঠোর ডায়েট ও শরীরচর্চার মাধ্যমে তিন মাস আগেই মাঠে ফিরেছিলেন তিনি। দুর্ঘটনার প্রায় ৫-৬ মাস পরে পুষ্টিবিদ শ্বেতা শাহের পরামর্শ নেন পন্থ। শ্বেতা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘ঋষভ কাঁদতে কাঁদতে আমায় বলে, ও কিছুই খেতে পারছে না। ওই সময় ওর এত রকম ওষুধ চলত, যার কারণে ওর পাকস্থলী প্রায় শুকিয়ে গিয়েছিল। আমি প্রথমেই ওর সমস্ত ওষুধ বন্ধ করে দিতে বলি আর ওকে এক মাসের জন্য ‘খিচুড়ি’ ডায়েটের মধ্যে থাকার পরমর্শ দিই।’’
দুর্ঘটনার পর প্রায় ১৬ কেজি ওজন ঝরিয়েছিলেন ঋষভ। ওজন ঝরানোর জন্য তিনি মূলত ‘ক্যালোরি ডেফিসিট ডায়েট’, অর্থাৎ তাঁর শরীরের জন্য যে পরিমাণ ক্যালোরির প্রয়োজন, তার থেকে কম ক্যালোরির খাবার রোজের তালিকায় রাখতেন। এই ডায়েটের জন্য তাঁকে তাঁর পছন্দের ফ্রায়েড চিকেন, রসমালাই, এমনকি বিরিয়ানি থেকেও দূরে থাকতে হয়েছে। সেরে ওঠার পর্বে পন্থের যা ওজন ছিল, সেই অনুযায়ী রোজ তাঁর শরীরে ১৪০০ ক্যালরির প্রয়োজন ছিল, তবে তাঁর মাত্র ১০০০ ক্যালরির খাবার খাওয়ার অনুমতি ছিল। পুষ্টিবিদের তৈরি করা কড়া ডায়েট মেনে চলতেন তিনি, ক্যালোরি মেপেই খেতে হত তাঁকে। বাড়িতে রান্না করা খাবার খেতেন পন্থ। পুষ্টিবিদের কড়া নির্দেশ ছিল, সারা দিনে তাঁর রান্নায় মাত্র ৫ মিলিলিটার এক্সট্রা ভার্জিন তেল ব্যবহার করা যাবে। তবে পন্থ বরাবরই সুস্বাদু খাবার খেতে পছন্দ করেন। তাই ওই তেলেই পন্থের জন্য তাঁর প্রিয় চিলি চিকেন ও গোয়ান ভিন্ডি (ঢেঁড়স) রান্না করা হত। কড়া ডায়েটে থেকে চার মাসে প্রায় ১৬ কেজি ওজন ঝরিয়ে ফেলেছিলেন ক্রিকেটার।
তবে ডায়েটের পাশাপাশি শরীরচর্চাও করেছেন তিনি। আর সারা দিনে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টার ঘুমও ছিল তাঁর সেই সময়ের রুটিনের অংশ।