—ফাইল চিত্র।
বিজেপির বিরুদ্ধে বিধায়ক কেনাবেচার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এ বার বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করল রাজস্থানের অশোক গহলৌত সরকার। রাজস্থানে কংগ্রেসের সরকার ফেলতে কে বা কারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, তা খতিয়ে দেখবে ৮ সদস্যের ওই তদন্তকারী দল। দলের নেতৃত্বে রয়েছেন রাজ্য পুলিশের অপরাধ দমন শাখার এসপি বিকাশ শর্মা। এ ছাড়াও দুর্নীতি দমন শাখা, স্পেশাল অপারেশনশ গ্রুপ (এসওজি) এবং সন্ত্রাস দমন শাখার একাধিক আধিকারিকদের তাতে শামিল করা হয়েছে।
রাজস্থানে কংগ্রেসের সরকার ফেলতে আর্থিক লেনদেন নিয়ে কথাবার্তার একাধিক অডিয়ো রেকর্ডিং সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে সচিন পাইলট ও তাঁর ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে মিলে রাজ্যের বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত রাজস্থানের গহলৌত সরকার ফেলার ষড়যন্ত্র করছিলেন বলে অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। তার পরই বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন কংগ্রেস চিফ হুইপ মহেশ জোশী। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই সিট গঠন করা হয়েছে।
বিজেপি যদিও শুরু থেকেই ওই অডিয়ো রেকর্ডিংয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছিল। তা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে টানাপড়েনের পর শনিবার অডিয়ো রেকর্ডিংটির সত্যতা স্বীকার করে নিলেও, অসাংবিধানিক ভাবে বিধায়কদের কথোপকথন রেকর্ড করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। ফোনে আড়ি পাতার ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়েছে কিনা, তা নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবিও তোলেন তিনি। তার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফেও রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে আড়ি পাতা নিয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: গোষ্ঠী সংক্রমণই, বলছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন
আরও পড়ুন: জুতো সেলাই থেকে সফল পাঠ, উচ্চমাধ্যমিকে ৯০ শতাংশ পেল হরিশ্চন্দ্রপুরের সঞ্জয়
তবে রাজ্যের তরফে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। তা সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই সিবিআই তদন্তের দাবি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হস্তক্ষেপ, এই দুইয়ের আড়ালে বিজেপি আসলে গা বাঁচানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন বিশিষ্ট আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। রবিবার সকালে টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘রাজস্থানের বেশ কিছু বিধায়ক এবং এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘোড়া কেনাবেচার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। এফআইআরও দায়ের হয়েছে। তা শেষ হওয়ার আগেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও তড়িঘড়ি এগিয়ে এসেছে, যাতে সিবিআইয়ের হাতে তদন্ত গেলে তাঁদের মন্ত্রী ক্লিনচিট পান এবং সত্যটা ধামাচাপা দেওয়া যায়।’’
সিঙ্ঘভির টুইট।
বিধায়ক কেনাবেচার অভিযোগ নিয়ে এই অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন অশোক গহলৌত। ট্রাইবাল পার্টির দুই সদস্য প্রকাশ্যে কংগ্রেসকে সমর্থন জানানোর পর শনিবারই রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। সেখানে আগামী সপ্তাহে বিধানসভা অধিবেশন ডাকা হতে পারে, গহলৌত এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সচিন পাইলট এবং ১৯ জন বিদ্রোহী বিধায়কের বিধায়ক পদ থাকবে কিনা মঙ্গলবার রাজস্থান হাইকোর্টে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। আদালতের রায় কোন দিকে যায়, তা দেখার জন্যই অপেক্ষা করছেন গহলৌত তথা কংগ্রেস। তার পরেই বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হবে।