দিল্লিতে সমীর ওয়াংখেড়ে পৌঁছতেই ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। ছবি সৌজন্য টুইটার।
শাহরুখ-পুত্র আরিয়ান খানকে ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে এক সাক্ষীর মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এনসিবি কর্তা সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর থেকে যখন তোলপাড় হচ্ছে গোটা মুম্বই, সেই সময়ই দিল্লিতে সমীরের হাজির হওয়া জোর জল্পনা উস্কে দিয়েছে। তা হলে কি সত্যিই সমীরকে তলব করা হয়েছে? যদিও এমন জল্পনাকে সরাসরি খারিজ করেছেন খোদ এনসিবি কর্তা।
দিল্লি বিমানবন্দরে সাংবাদিকরা তাঁকে ছেঁকে ধরলে সমীর বলেন, ‘‘কোনও তলব নয়, কিছু কাজের জন্য দিল্লিতে এসেছি।” তিনি আরও বলেন, “আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হলে আমি একশো শতাংশ সেই তদন্তে সহযোগিতা করব। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।”
অভিযোগ ওঠার পরই সমীরের বিরুদ্ধে তদন্তে নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এনসিবি-র ডেপুটি জেনারেল ডিরেক্টর জ্ঞানেশ্ব সিংহকে। তার পর থেকে জল্পনা শুরু হয়, তা হলে কি সমীরকে এই মামলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে? যদিও সে বিষয়ে জ্ঞানেশ্বর কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শুধু জানিয়েছেন, তদন্ত সবে শুরু হয়েছে। এনসিবি এবং জ্ঞানেশ্বরের কাছে এ বিষয়ে সবিস্তারে রিপোর্টও চাওয়া হয়।
এ বিষয়ে বৈঠকের জন্য দিল্লিতে যাওয়ার কথা ছিল সমীরের। সোমবার দিল্লিতে হাজির হতেই জোর জল্পনা শুরু হয়, তা হলে কি তদন্তের জন্য এনসিবি কর্তাকে ডেকে পাঠানো হল? সমীরের বিরুদ্ধে আভিযোগকে আরও জোরালো করতে আরিয়ান মামলার অন্যতম সাক্ষী প্রভাকর সেইল সোমবারই পুলিশ কমিশনারের দফতরে যান। তাঁর দাবি, আরিয়ানকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য সমীরই ২৫ কোটি টাকা চেয়েছিলেন।
যদিও এনসিবি সমীরের পাশেই দাঁড়িয়েছে। তাঁর কাজের রেকর্ডে কোনও ‘দাগ’ নেই বলেও জনিয়েছে তারা। কিন্তু মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিকের সঙ্গে ওয়াংখেড়ের টানাপড়েন এনসিবি কর্তার সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মাদক মামলাকে সম্পূর্ণ ভুয়ো বলে অভিযোগ তুলেছেন মালিক। শুধু তাই নয়, বিজেপি এবং এনসিবি এক সঙ্গে যুক্ত হয়ে মুম্বইয়ে সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ তাঁর। ওয়াংখেড়ের জন্ম সংক্রান্ত একটি তথ্য টুইট করে মালিক দাবি করেছেন, প্রতারণা শুরু এখান থেকেই।
মালিক যখন একের পর এক অভিযোগ তুলেছেন এনসিবি কর্তার বিরুদ্ধে, পাল্টা সমীর এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আমার ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে, আমার পরিবারের গোপনীয়তা ভাঙার চেষ্টা চলছে। ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাকে, আমার পরিবার, বাবা এবং স্বর্গীয় মাকেও বদনাম করার প্রচেষ্টা চলছে।’ তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারে, এই আশঙ্কায় তিনি আদালতের দ্বারস্থও হয়েছেন । সমীরের অভিযোগ, মন্ত্রীর এ ধরনের আচরণে তাঁর পরিবার অত্যন্ত মানসিক চাপে রয়েছে।