জোট গড়ে ভোটে লড়তে চায় অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি (আপ)। ফাইল চিত্র।
গোয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে ভোটে লড়তে চায় অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি (আপ)। রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, আপের এই প্রস্তাব নিয়ে তৃণমূল এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। দু’দলের মধ্যে এক দফা আলোচনা হয়েছে মাত্র। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসন্ন গোয়া সফরে বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ের কথা হবে।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দু’দিনের সফরে আগামী রবিবার গোয়া যাচ্ছেন। সোমবার পৌঁছবেন মমতা। সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, মমতা যাওয়ার আগে বিভিন্ন দলের বেশ কিছু নেতা ও কর্মী তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন। মমতার সফরের পর, ১৫ তারিখ নাগাদ গোয়া প্রদেশ কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছে তৃণমূল সূত্র।
রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, গত কয়েক মাসে বিভিন্ন রাজ্যে এবং দিল্লিতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই সংঘাতের রাস্তায় যাচ্ছে মমতার দল। গোয়ায় এর আগে মমতা এসে তাঁর বক্তৃতায় বিজেপির পাশাপাশি সমান ভাবে আক্রমণ করেছিলেন কংগ্রেসকেও। সেই রাজ্যে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা যোগ দিচ্ছেন তৃণমুলে। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি (এমজিপি) হাত মিলিয়েছে তৃণমূলের সঙ্গে। এখন আপ যদি তৃণমূলের সঙ্গে যোগ দেয়, তা হলে নতুন সমীকরণে বিজেপি-বিরোধী ভোট কিছুটা একজোট হবে।
গোয়ায় আপের বিরাট জনভিত্তি না থাকলেও কিছু স্থানীয় পকেটে নতুন মুখ হিসাবে কেজরীবালের ভোট রয়েছে বলে মনে করছে তৃণমূল। আপকে নিয়ে কিছুটা নাড়াচাড়াও শুরু হয়েছে গোয়ায়। কেজরীবাল ইতিমধ্যেই বিরাট প্রতিশ্রুতির প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে মন্দির এবং চার্চে যাচ্ছেন দলের নেতা-কর্মীরা। ফলে এমজিপি-আপ-তৃণমূল এক হলে তা কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্কে আরও বেশি চিড় ধরাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তাতে বিজেপি ফায়দা তুলে নিতে পারে, এমন সম্ভাবনার কথাও উঠছে। কারণ, গোয়ায় ক্ষমতাসীন বিজেপির মুখ্য প্রতিপক্ষ কংগ্রেসই।
গোয়ায় ১৯৬১ সালে পর্তুগিজ শাসনের অবসানের পর, ১৯৬৩ থেকে টানা ১৮ বছর গোয়ায় সরকার চালিয়েছে এমজিপি। ২০১৭-র সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনটি আসনে জিতেছিল এমজিপি। সেই সময় বিজেপিকে সমর্থন জানিয়ে জোট সরকারে শামিল হয় তারা। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পরে বিজেপির সঙ্গে এমজিপি-র সম্পর্কে চিড় ধরে। সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে তারা। দলের দুই বিধায়ক এমজিপি ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ২০২২-র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাতে চায় এমজিপি। কংগ্রেস তাদের সঙ্গে জোট গড়ার চেষ্টা করলেও, তৃণমূল শেষ পর্যন্ত এই দৌড়ে কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে তাদের নিজেদের মঞ্চে আনতে সক্ষম হয়েছে।
গোয়ার এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেরো তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁকে রাজ্যসভার সদস্য করা হয়েছে। আরও এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আলেমাও চার্চিল গোয়ার ভোটে তৃণমূল প্রার্থী হতে পারেন বলে সূত্রের খবর। একযোগে দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ভোটের ময়দানে নামাতে পারেন মমতা। চার্চিল এর আগে কলকাতা সফর সেরে এসেছেন। মমতার আসন্ন সফরে তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা। ২০১৪ সালেও তিনি এক বার তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। গোয়া দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে পরাজিত হয়ে চার্চিল চলে যান এনসিপি-তে।